পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাফনায় বক্তৃতা—বেদান্ত > & নিবদ্ধ, তাহা নহে ; আমাদের জাতীয় সাহিত্যের প্রত্যেক বিভাগে, আমাদের জাতীয় জীবনে ইহা অনুপ্রবিষ্ট হইয়া রহিয়াছে। এখানে—কেবল এখানেই ইহা প্রাত্যহিক জীবনে অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে, আর চক্ষুষ্মান ব্যক্তিমাত্রেই স্বীকার করিবেন যে, এখানে ছাড়া আর কোথাও ইহা কার্যে পরিণত করা হয় নাই । এইভাবে আমাদিগকে জগৎকে ধর্মশিক্ষা দিতে হইবে । ভারত ইহা অপেক্ষাও অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষা দিতে সমর্থ বটে, কিন্তু সেগুলি কেবল পণ্ডিতদের জন্য । এই নম্রতা, শান্তভাব, তিতিক্ষা, পরধর্ম-সহিষ্ণুতা, সহানুভূতি ও ভ্রাতৃভাবের মহতী শিক্ষা আবালবৃদ্ধবনিতা, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সর্বজাতি, সর্ববর্ণ শিক্ষা কৱিতে পারে। একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্তি । জাফনায় বক্ততা-বেদান্ত কলম্বো হইতে কাণ্ডি, অনুরাধাপুর ও ভাভোনিয়া হইয়া স্বামীজী জাফুন শহরে পদার্পণ করেন । সর্বস্ত্র তিনি বিপুলভাবে সম্বধিত হন । জাফনায় অভিনন্দনের উত্তরে ২৩শে জানুআরি হিন্দু কলেজ প্রাঙ্গণে তিনি বেদান্ত সম্বন্ধে এই সুদীর্ঘ বক্তৃতাটি দেন । বিষয় অতি বৃহৎ, কিন্তু সময় সংক্ষিপ্ত ; একটি বক্তৃতায় হিন্দুদিগের ধর্মের সুপূর্ণ বিশ্লেষণ সুসুম্ভব। স্বতরাং আমি তোমাদের নিকট আমাদের ধর্মের মূল তত্ত্বগুলি যত সহজ ভাষায় পারি, বর্ণনা করিব। যে ‘হিন্দু নামে পরিচয় দেওয়া এখন আমাদের প্রথা হই। দাড়াইয়াছে, এখন কিন্তু তাহার আর সার্থকতা নাই ; কারণ ঐ শব্দের অর্থ—“যাহারা সিন্ধুনদের পারে বাস করিত’। প্রাচীন পারসীকদের বিরুত উচ্চারণে ‘সিন্ধু’ শব্দই হিন্দুরূপে পরিণত হয় ; তাহার সিন্ধুনদের অপরতীর-বাসী সকলকেই হিন্দু বলিতেন। এইরূপে ‘হিন্দু শব্দ আমাদূের নিকট আসিয়াছে ; মুসলমান-শাসনকাল হইতে আমরা ঐ শব্দ নিজেদের উপর প্রয়োগ করিতে আরম্ভ করিয়াছি । অবশু এই শব্দ-ব্যবহারে কোন ক্ষতি নাই, কিন্তু আমি পূর্বেই বলিয়াছি, এখন ইহার সার্থকতা নাই ; কারণ- তোমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও য়ে, বর্তমানকালে সিন্ধুনদের এই দিকে সূকলে আৰু প্রাচীনকালের মতো এক ধর্ম মানেন না। স্বতরাং ঐ শন্ধে শুধু খাটি হিন্দু বুঝায় না , উহাতে মুসলমান, খ্ৰীষ্টান, জৈন এবং ভারতের