পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հbre স্বামীজীর বাণী ও রচনা আগাগোড়া সত্য। ধর্ম সাক্ষাৎ করিতে হইবে, কেবল গুনিলে হইবে না, কেবল তোতাপাখির মতো কতকগুলি কথা মুখস্থ করিলেই চলিবে না, কেবল বুদ্ধির সায়—বুদ্ধিগত সম্মতি দিলেই চলিবে না ; ইহাতে কিছুই হয় না, ধর্ম আমাদের ভিতর প্রবেশ করা চাই। প্রাচীনেরা এবং আধুনিকেরাও সেই ঈশ্বরকে দেখিয়াছেন—ইহাই আমাদের নিকট ঈশ্বরের অস্তিত্বের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ ; আমাদের যুক্তিবিচার এইরূপ বলিতেছে—এ-জন্তই যে আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী, তাহা নহে। আত্মার অস্তিত্ব প্রমাণ করিবার উৎকৃষ্ট যুক্তি আছে বলিয়াই যে আমরা আত্মায় বিশ্বাসী, তাহা নহে ; আমাদের বিশ্বাসের প্রধাম ভিত্তি এই যে, এই ভারতে প্রাচীনকালে সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তি এই আত্মাকে দর্শন করিয়াছেন, বর্তমান কালেও খুজিলে অন্ততঃ দশজন আত্মজ্ঞ পুরুষের সাক্ষাং মিলিবে এবং ভবিষ্যতেও সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তির অভু্যদয় হইবে, র্যাহারা আত্মদর্শন করিবেন। আর যতদিন না মানুষ ঈশ্বরদর্শন করিতেছে, যতদিন না সে আত্মার সাক্ষাৎকার করিতে সমর্থ হইতেছে, ততদিন তাহার মুক্তি অসম্ভব। অতএব সর্বাগ্রে এই-বিষয়টি আমাদিগকে বিশেষভাবে বুঝিতে হইবে এবং আমরা উহা যতই ভাল করিয়া বুঝিব, ততই ভারতে সাম্প্রদায়িকতার হ্রাস হইবে। কারণ সে-ই প্রকৃত ধাৰ্মিক, যে ঈশ্বরকে দর্শন করিয়াছে—তাহাকে লাভ করিয়াছে। ভিদ্যতে হৃদয়গ্রস্থিশ্চিন্দ্যস্তে সর্বসংশয়াঃ । ** ক্ষীয়স্তে চাস্ত কর্মাণি তস্মিন দৃষ্টে পরাজরে ॥১ —র্তাহারই হৃদয়গ্রন্থি ছিন্ন হয়, তাহারই সকল সংশয় চলিয়া যায়, তিনিই কর্মফুল হইতে মুক্ত হন, যিনি কার্য ও কারণরূপী পরমাত্মাকে দর্শন করেন। & হায়, আমরা অনেক সময় অনৰ্থক বাগাড়ম্বরকে আধ্যাত্মিক সত্য বলিয়া ভ্রম করি, পাণ্ডিত্যপুর্ণ বক্তৃতার ছটাকে গভীর ধর্মামৃভূতি মনে করি ; তাই সাম্প্রদায়িকতা, তাই বিরোধ। যদি আমরা একবার বুঝিতে পারি যে প্রত্যক্ষামুভূতিই প্রকৃত ধর্ম, তাহা হইলে নিজ হৃদয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বুঝিতে চেষ্টা করিব—আমরা ধর্মের সত্যসমূহ উপলব্ধির পথে কতদূর অগ্রসর । তাহা হইলেই আমরা বুঝিব যে, অমরা নিজেরাই অন্ধকারে ঘুরিতেছি ওঁ অপরকেও ১ মুণ্ডক উপ. ২২৮