পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ २ স্বামীজীর বাণী ও রচনা আমাকে অসুখী করিয়াছি। আর ইহাও প্রতীয়মান হইকে যে, আমি যদি ইচ্ছা করি, তবে সুখীও হইতে পারি। যদি আমি অপবিত্ৰ হই, তবে তাবুও আমার নিজকৃত ; আর ইহাও বুঝিতে হইবে যে, আমি ইচ্ছা করিলে আবার পবিত্র হইতে পারি। এইরূপ সকল বিষয়ে বুঝিতে হইবে । মানুষের ইচ্ছ। কোন ঘটনার অধীন মহে । মানুষের অনন্ত ইচ্ছাশক্তি ও মুকু স্বভাবের সম্মুখে সকল শক্তি, এমন কি, প্রকৃতিক শক্তিগুলি পর্যন্ত মাথা নত করিবে—দাস হইয়া থাকিবে । এইবার স্বভাবতই এই প্রশ্ন আসিবে-আত্মা কি ? আত্মাকে না জানিলে আমাদের শাস্ত্রোক্ত ঈশ্বরকেও জানিতে পারি না। ভারতে ও অন্যান্য দেশে বহিঃপ্রকৃতির আলোচনা দ্বার। সেই সর্বাতীত সন্তার আভাস পাইবার চেষ্টা হইয়াছে। আমরা জানি, ইহার ফলও অতি শোচনীয় হইয়াছে। সেই সভার আভাস পাওয়া দূরে থাক, আমরা যতই জড-জগতের আলোচনা করি, তত অধিক জড়বাদী হইতে থাকি। যদি বা একটু-আধটু ধর্মভাব পূর্বে থাকে, ੋজগতের আলোচনা করিতে করিতে তাহাও দুব হইয় যায়। অতএব আধ্যাত্মিকতা ও সেই পরমপুরুষের জ্ঞান বহজগৎ হইতে পাওয়া যায় না । অন্তরমধ্যে-আত্মার মধ্যে উহার অন্বেষণ করিতে হইবে । বাহাজগৎ আমাদিগকে সেই অনন্তের কোন সংবাদ দিতে পারে না, অন্তর্জগতে অন্বেষণ করিলেই উহার সংবাদ পাওয়া যায়। অতএব কেবল আত্মউত্ত্বের অন্বেষণেই; আত্মতত্ত্বের বিশ্লেষণেই পরমাত্ম-তত্ত্বজ্ঞান সম্ভব। জীবাত্মার স্বরূপসম্বন্ধে ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায় গুলির মতভেদ আছে বটে, কিন্তু কোন কোন বিষয়ে সকলে একমত। যথা—সকল জীবাত্মা অনাদি অনস্ত, স্বরূপত: অবিনাশী । দ্বিতীয়তঃ প্রত্যেক আত্মায় সর্ববিপ শক্তি আনন্দ পবিত্রত সর্বব্যাপিতা ও সর্বজ্ঞত্ব আন্তর্নিহিত রহিয়াছে। এই গুরুতর তত্ত্বটি সর্বদা স্মরণ রাখিতে হইবে । প্রত্যেক মানবে, প্রত্যেক প্রাণীতে—সে যতই দুর্বল বা মন্দ হউক, সে বড় বা ছোট হউক —সেই সৰ্বব্যাপী সর্বজ্ঞ আত্মা রহিয়াছেন | আত্মা হিসাবে কোন প্রভেদ নাই— প্রভেদ কেবল প্রকাশের তারতম্যে। আমার ও ঐ ক্ষুদ্রতম প্রাণীর মধ্যে প্রভেদ কেবল প্রকাশের তারতম্যে—স্বরূপত তাহার সহিত আমবু কোন ভেদ নাই ; সে আমার ভ্রাত ; তাহারও যে আত্মা, আমারও সেই আত্মা । ভারত এই মহত্তম তত্ব জগতে প্রচার করিয়াছে। অন্তান্ত দেশে সমগ্র মানবের ভ্রাতৃভাব’