পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

,ইংলণ্ডে ভারতীয় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রভাব \98冷 কিরূপ বিস্ময়াবিষ্ট হইয়াছিলাম, তাহা আপনারা অনায়াসে অনুমান করিতে পারেন। সম্ভবতঃ আপনারা অনেকেই জানিয়া সুখী হইবেন যে, ঐগুলি সবই প্রাচীন বাঙলা অক্ষরে লিখত। আমাদের বঙ্গীয় পুর্বপুরুষগণের ধর্মপ্রচার-কার্ষে মহোৎসাহের কীর্তিস্তম্ভম্বরূপ ঐগুলি আজ পর্যন্ত বিদ্যমান !. এশিয়ার অন্তর্গত এই-সকল দেশ ছাড়িয়া দিলেও ভারতের আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রভাব এত সুদূরপ্রসারী ও স্পষ্ট যে, এমন কি পাশ্চাত্যদেশেও ঐ-সকল স্থানের আচার-ব্যবহারাদির গভীর মর্মস্থলে প্রবেশ করিয়া আমি সেখানেও উহার প্রভাবের চিহ্ন দেখিতে পাইলাম । ভারতবাসীর আধ্যাত্মিক ভাবসকল ভারতের পুর্বে ও পশ্চিমে—উভয়ত্রই গমন করিয়াছিল । ইহা এখন ঐতিহাসিক সত্য বলিয়া প্রতিপন্ন হইয়াছে। সমগ্র জগং ভারতের অধ্যাত্মতত্ত্বের নিকট কতদূর ঋণী এবং ভারতের আধ্যাত্মিক শক্তি মানবজাতির অতীত ওঁ বর্তমান জীবনগঠনে কিরূপ শক্তিশালী উপাদান, তাহা এখন সকলেই অবগত আছেন । এ-সব তো অতীতের ঘটনা । - আমি আর একটি অদ্ভূত ব্যাপার দেখিতে পাই । তাহা এই যে, সেই আশ্চর্য এংলো-স্যাক্সন জাতি সামাজিক উন্নতি এবং সভ্যতা ও মনুষ্যত্বের বিকাশরুপ অত্যদ্ভুত শক্তির বিকাশ করিয়াছে। শুধু তাহাই কেন, আমি আরও একটু অগ্রসর হইয়া বলিতে পারি, এংলো-স্যাক্সনের শক্তির প্রভাব ব্যতীত আজ আমরা যেমন ভারতীয় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রভাব আলোচনা করিবার জন্য এই সভায় সমবেত হইয়াছি, তাহা হইতে পারিতাম না। আর পাশ্চাত্যদেশ হইতে প্রাচ্যে—আমাদের স্বদেশে ফিরিয়া দেখিতে পাই, সেই এংলো-স্যাক্সন শক্তি সমুদয় দোষসত্ত্বেও তাহার বিশিষ্ট সুনির্দিষ্ট গুণগুলি লইয়া এখানে কাজ করিতেছে । আমার বিশ্বাস, এতদিনে অবশেষে এই উভয় জাতির সম্মিলনের সুমহং ফল সিদ্ধ হইয়াছে। ব্রিটিশ জাতির বিস্তার ও উন্নতির ভাব আমাদিগকে বলপুর্বক উন্নতির পথে ধাবিত করিতেছে এবং ইহাও আমাদিগকে স্মরণ রাখিতে হইবে যে, পাশ্চাত্য সভ্যতা গ্রীকদিগের নিকট হইতে প্রাপ্ত ; এবং গ্রীক-সভ্যতার প্রধান ভাব-প্রকাশ বা বিস্তার। ভারতে আমরা মননশীল বটে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সময়ে সময়ে আমরা এত অধিক "মননশীল হই যে, ভাব-প্রকাশের শক্তি কিছুমাত্র অবশিষ্ট থাকে না । ক্রমে এইরূপ দাড়াইল যে,পৃথিবীর নিকট আমাদের ভার ব্যক্ত করবার শক্তি আর