পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& স্বামীজীর বাণী ও রচনা ما بتاريلا লৌহদণ্ডকে ছেদন করিতে পারে, আবার বৃত্তাকারে রূপায়িত হইবার মতো নমনীয়ও বটে । • স্বর্ণ ও রৌপ্যপাত্রে তাহারা ছন্দ-গাথা উৎকীর্ণ করিয়াছিল। মণিমণিক্যের ঐকতানে, মর্যর-প্রস্তরের বহু বিচিত্র স্থাপত্যে, বর্ণ-সুষমার সঙ্গীতে এবং সূক্ষ্ম বস্ত্রশিল্পের স্বষ্টিতে—যে-হষ্টি এই জগতের বাহিরে অন্য এক রূপকথার জগতের বলিয়া মনে হইত, সব কিছুর পশ্চাতে এই জাতির চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের সহস্রবর্ষব্যাপী সাধনা নিহিত ছিল । কলা, বিজ্ঞান, এমন কি প্রাত্যহিক জীবনের বাস্তবতা পর্যন্ত—সব কিছু এমন ছন্দোময় ভাবদ্বারা মণ্ডিত ছিল যে, চরমে ইন্দ্রিয়ানুভূতি অতীন্দ্রিয় স্তরে উত্তীর্ণ হইত, স্থূল বাস্তবতা সূক্ষ্ম অবাস্তবতার রঙিন আভায় অন্তরঞ্জিত হইয়। উঠিত । এ-জাতির দূৰ্ব-অতীত ইতিহাসের যতটুকু আভাস পাওয়া যায়, তাহা হইতে বোঝা যায়, সেই আদিযুগেই—ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োগ করিবার যন্ত্র-হিসাবে এই বৈশিষ্ট্য তাহাদের আয়ত্তে ছিল । বেদ-গ্রন্থে এই জাতির জীবনাখ্যায়িকা চিত্রিত হইবার পূর্বে চলার পথে বহু প্রকারের ধর্ম ও সমাজ পশ্চাতের পথরেখায় নিশ্চয়ই বিলুপ্ত হইয়াছিল। সেখানে দেখা যায়—এক সুসংবদ্ধ দেবতামণ্ডলী, উৎসবাদির বিস্তারিত ব্যবস্থা, ভিন্ন ভিন্ন বৃত্তির তাগিদে গঠিত বংশানুক্রমিক একটি সমাজ । সেখানে ইতিমধ্যেই অনেক প্রয়োজনীয় ও বিলাসের সামগ্ৰী বৰ্তমান । আধুনিক পণ্ডিতগণের প্রায় সকলেই এ-বিষয়ে একমত যে, ভারতীয় জলবায়ু এবং ভারতে প্রচলিত রীতিনীতি তখনও এই জাতির উপর তেমন প্রভাব বিস্তার করিতে পারে নাই । আরও কয়েক শতাব্দী অতিক্রান্ত হইল। তখন দেখা গেল এক মানবগোষ্ঠী, তাহদের উত্তরে তুষারাচ্ছন্ন হিমালয়, দক্ষিণে দক্ষিণাপথের উষ্ণতা—মধ্যে । দিগন্তবিস্তীর্ণ সমতল, সীমাহীন অরণ্য-অঞ্চল, আর তাহণদেরই মধ্য দিয়া দুর্বারগতি নদীসমূহ প্রচণ্ড স্রোতে প্রবাহিত। তাতার, দ্রাবিড়, আদিবাসী প্রভৃতি বিভিন্ন জাতির ক্ষণিক আভাস পাওয়া যায় ; শেষে দেখা যায় ইহাদেরই শোণিতধারা, ভাষা ধর্ম ও আচার-পদ্ধতির নির্ধারিত অংশ-সংযোগে—ধীরে ধীরে আর্যদেরই অহরূপ আর এক মহান জাতির উদ্ভব হইয়াছে, যাহারা আরও শক্তিশালী,—উদার অঙ্গীভূত-করণের ফলে অধিকতর সংবদ্ধ। ৮