পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*。之 স্বামীজীর বাণী ও রচনা বিরাট সত্যবদ্ধ জাতিতে গড়িয়া তোলাই এক প্রকৃত সমস্ত হইয়াপাড়াইয়াছিল। বৌদ্ধগণওঁ অবশ্য এই সমস্যার সমাধানে অগ্রসর হইয়াছিলেন, কিন্তু তখন তুহার আয়তন ও গুরুত্ব এত বিস্তৃত ছিল না । তখন পর্যন্ত প্রশ্ন ছিল—আর্যজাতিভূক্ত হইবার জন্য যে-সকল মানবগোষ্ঠী আগ্রহান্বিত, তাহাদিগকে স্বকীয় সংস্কৃতিতে অল্প প্রাণিত করিয়া বহুবিচিত্র উপাদান-সমন্বিত এক বিরাট আর্যদেহ গড়িয়া তোল ।...বিশেষ সুবিধাদানের এবং আপসের মনোভাব সত্ত্বেও বৌদ্ধধর্ম প্রভূত সাফল্য অর্জন করিয়াছিল, এবং ভারতবর্ষের জাতীয় পর্মরূপে বিরাজিত ছিল । কিন্তু কালক্রমে তাহদের ইতরজাতি-সুলভ ইন্দ্রিয়াসক্তি-বহুল উপাসনার প্রলোভন অৰ্যগোষ্ঠীর অস্তিত্বের পক্ষেই মারাত্মক হইয়| উঠিয়াছিল, এবং সে সংযোগ দীর্ঘতর কালের জন্য স্থাযী হইলে আর্যসভাত নিঃসন্দেহে বিনষ্ট হইত। ইহার পর স্বভাবতই আত্মরক্ষার একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, এবং নিজবাসভূমিতে স্বতন্ত্র ধর্মসম্প্রদায়রূপে বৌদ্ধধর্ম আর টিকিয়া থাকিতে পারে নাই । সেই প্রতিক্রিয়া-আন্দোলন উত্তরে কুমারিল্প এবং দক্ষিণে আচার্য শঙ্কর ও রামাতুজ কর্তৃক পরিচালিত হইষ বহু মত, বহু সম্প্রদায়, বহু পূজা-পদ্ধতি পুঞ্জীভূত হইয়। হিন্দুধর্মে তাহার শেষ রূপ পরিগ্রহ করিয়াছিল । বিগত সহস্ৰ বংসর কিংবা তদপেক্ষা অপিক কাল ধরিয়া এই অঙ্গীভূত করাই ছিল তাহার প্রধান কাজ । মাঝে মাঝে দেখা দিত সাময়িক সংস্কার-আন্দোলন । এই প্রতিক্রিয়া প্রথমতঃ বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানগুলির পুনঃপ্রবর্তনের চেষ্টা করিয়াছিল। পরে তাহাতে ব্যর্থ হইয়া বেদের দার্শনিক ভাগ বা উপনিষদসমূহকেই ভিত্তিরূপে স্থাপন করিয়াছিল । এই আন্দোলন ব্যাসদেবের মীমাংসা-দর্শন এবং শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ গীতাকে পুরোভাগে স্থাপন করে এবং পরবর্তী কালের যাবতীয় আন্দোলন ঐ পন্থা অবলম্বন করিয়াই অগ্রসর হইয়াছিল । শঙ্করাচার্যের আন্দোলন অতি উচ্চ জ্ঞানমার্গেই চালিত হইয়াছিল। কিন্তু জাতিভেদে অতিনিষ্ঠ, সহজ ভাবাবেগ সম্পর্কে ঔদাসীন্য এবং শুধু সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে প্রচার—এই ত্ৰিবিধ কারণে জনসাধারণের মধ্যে সে আন্দোলন বিশেষ ফল প্রস্থ হয় নাই । অন্যদিকে রামাতুজ একটি অত্যন্ত কার্যকর ও বাস্তব মতবাদের ভিত্তিতে এবং ভাব-ভক্তির বিরাট আবেদন লইয়া অগ্রসর হইয়াছিলেন । ধর্মোপলব্ধির ক্ষেত্রে জন্মগত জাতিবিভাগ