পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দু ও খ্ৰীষ্টান 8>登 দেখবে অসাধারণ কোন পবিত্র মানব মানুষের উন্নতির জন্তে চেষ্টা করছেন, জেনে—তার মধ্যে ভগবানই রয়েছেন। -- ཨ་ཙམ་ནྀ་ বুঝতে পারছ, কেন আমরা কোন ধর্মের সঙ্গে লড়াই করি না। আমুরা কখনও বলি না, আমাদের ধর্মই মুক্তির একমাত্র রাস্তা। যে কোন মানুষ সিদ্ধাবস্থা লাভ করতে পারে ; তার প্রমাণ ? প্রত্যেক দেশেই দেখি পবিত্র সাধু পুরুষ রয়েছেন, আমার ধর্মে জন্মগ্রহণ করুন বা না করুন—সর্বত্র সদভাবাপন্ন নরনারী দেখা যায় । অতএব বলা যায় না, আমার ধর্মই মুক্তির একমাত্র পথ। ‘অসংখ্য নদী যেমন বিভিন্ন পর্বত থেকে বেরিয়ে একই সমুদ্রে তাদের জলধারা মিশিয়ে দেয়, তেমনি বিভিন্ন ধর্ম বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্ভূত হয়ে তোমারই কাছে আসে”—এটি ভারতে ছোট ছেলেদের প্রতিদিনের একটি প্রার্থনার অংশ। যারা প্রতিদিন এই ধরনের প্রার্থনা করে, তাদের পক্ষে ধর্মের বিভিন্নতা নিয়ে মারামারি করা একেবারেই অসম্ভব । এ তো গেল দার্শনিকদের কথা, এদের প্রতি আমাদের খুবই শ্রদ্ধা, বিশেষ ক’রে সত্যভ্রষ্টা মহাপুরুষ শ্ৰীকৃষ্ণের প্রতি ; তার কারণ, তার অপুর্ব উদারত। দ্বারা তিনি তার পুর্ববর্তী সকল দর্শনের সমন্বয় করেছেন । ঐ যে মানুষটি মূতির সামনে প্রণাম করছে, ও কিন্তু তোমর। যে ব্যাবিলন বা রোমের , পৌত্তলিকতার কথা শুনেছ, তার মতো নয়। এ হিন্দুর এক বিশেষত্ব। মূতির সামনে মানুষটি চোখ বুজে ভাবতে চেষ্টা করে, সোহহম, তিনিই আমার স্বরূপ ; আমার জন্ম নেই, মৃত্যু নেই ; আমার পিতা নেই, মাত৷ •নেই ; আমি দেশকালে সীমাবদ্ধ নই ; আমি অখণ্ড সচ্চিদানন্দ । সোহহম, সোহহম ; আমি কোন পুস্তকের বাধনে বাধা পড়িনি ! কোন তীর্থের বা কোন কিছুর বন্ধন আমার নেই! আমি সৎস্বরূপ, আমি আনন্দস্বরূপ, সোহহম, সোহহম ( বার বার এই কথা উচ্চারণ ক’রে সে বলে, হে ঈশ্বর, আমার মধ্যে তোমাকে আমি অনুভব করতে পারছি না, বড় হতভাগ্য আমি।” বই-পড়া জ্ঞানের ওপর ধর্ম নির্ভর করে না। ধর্ম আত্মাই, ধর্ম ঈশ্বর, শুধু বই-পড়া জ্ঞান বা বক্তৃতা-শক্তির দ্বারা ধর্ম লাভ হয় না। সব চেয়ে বিদ্বান ব্যক্তিকে বলো—আত্মাকে আত্মা-রূপে চিন্তা করতে, তিনি পারবেন না । আত্মার সম্বন্ধে, তুমি একটা কল্পনা করতে পারে, তিনিও পারেন। কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষা ব্যতীত আত্মস্বরূপে চিন্তা অসম্ভব। ঈশ্বর-তত্ত্ব যতই শোনো না