পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতে খ্ৰীষ্টধর্ম 8 Հ Ֆ মাটিতে শুতেও পারত। স্বতরাং ভারতে তার স্থা ও সন্তানদের সঙ্গা খোজবার, জন্য ইংরেজী ভাষাভাষীদের মধ্যেই সে বাস করে । মিশনরী প্রচেষ্ট ভারতবর্ষের অন্তরাত্মাকে কিছুমাত্র স্পর্শ করতে পারেনি। অধিকাংশ মিশনরীই তাদের কাজের অযোগ্য, আমি একজনও মিশনরী দেখিনি, যে সংস্কৃত জানে। কোন দেশের মানুষ ও ঐতিহ্য সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ব্যক্তি সেই দেশের লোকেদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন হবে কি ক’রে ? আমি কারও উপর দোষারোপ করছি না, । তবে এ-কথা সত্য যে, খ্ৰীষ্টানরা এমন লোকদের মিশনরী ক’রে পাঠায়, যাদের মোটেই যোগ্যতা নেই। এটা দুঃখের বিষয় যে, প্রকৃত সন্তোষজনক ফল কিছুই হচ্ছে না, অথচ কিছু লোককে ধর্মান্তরিত করার জন্য টাকা খরচ করা হচ্ছে । মুষ্টিমেয় যারা ধর্মান্তরিত হয়, তারা মিশনরীদের চারদিকে ঘোরে এবং তাদের ওপর নির্ভর ক’রে জীবিকা অর্জন করে । যে-সকল ধর্মান্তরিতকে ভারতে চাকরিতে বহাল রাখা হয় না, তারা আবার খ্ৰীষ্টধর্মও ত্যাগ করে। সংক্ষেপে সমগ্র ব্যাপারটা হ’ল এই । ধর্মাস্তরিত করার রকমটাও একেবারে হাস্তোদীপক । মিশনারীদের আনীত টাকা তারা গ্রহণ করে। শিক্ষার দিকটা বিবেচনা করলে মিশনরীদের প্রতিষ্ঠিত কলেজগুলি সন্তোষজনক ; কিন্তু ধর্মের ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা। হিন্দুরা তীক্ষবুদ্ধি ; তারা বড়শিতে ধরা না দিয়ে টোপট খেয়ে নেয় ! তাদের আশ্চর্য সহনশীলতা ! একদা কোন মিশনরী বলেছিল, ‘গোট ব্যাপারটায় সবচেয়ে বড় অস্থবিধে ঐখানেই ; আত্মসন্তুষ্ট লোকেদের কখনও ধর্মান্তরিত করা সম্ভব নয়।’ আর মহিলা মিশনীর কোন কোন বাড়ি গিয়ে মেয়েদের বাইবেল সম্পর্কে কিছু শিক্ষা দেন এবং কি ক’রে বুনতে হয়—তাও শেখান ; এজন্য তারা মাসে চার শিলিং ক’রে পান । ভারতের মেয়েরা কখনও ধর্মান্তরিত হবে না । স্বদেশের নাস্তিকতা ও সংশয়বাদই মিশনরীদের অন্য দেশে যেতে প্ররোচিত করছে । এদেশে এসে আমি বহু উদার প্রকৃতির পুরুষ ও নারীকে দেখে বিস্মিত হয়েছি। কিন্তু ধর্মমহাসভার পর এক বিখ্যাত প্রেসবিটেরিয়ান সংবাদপত্র একটি তীব্র আক্রমণাত্মক রচনা দ্বারা আমাকে সংবর্ধনা করেছিল। সম্পাদক এটাকে বলেন-- উৎসাহীন মিশনরীর জাতীয়তাকে বিসর্জন দেয় না বা দিতে পারে না, তারা মোটেই উদার নয়" অতএব ধর্মান্তরিত করার মাধ্যমে তাদের দ্বারা কিছুই সাধিত হয় না ; অৰণ্ড নিজেদের মধ্যে স্ট্রমাজিক মেলামেশায় তাদূের সময় বেশ ভালই ।