পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§o স্বামীজীর বাণী ও রচনা দিয়া গিয়াছে—এমন কি তাহারা পুলিসের দ্বারা অনুস্থত হইয়া কারাগারে নিক্ষিপ্ত হইয়াছে, অবশেষে যখন গভর্নমেণ্ট বিশেষ প্রমাণ পাইয়াছেন; তাহারা নির্দোষ তখন তাহারা মুক্তিলাভ করিয়াছে। 龜 * এখন তাহারা বিংশতিজন মাত্র। কালই তাহাদের সংখ্যা দুই সহস্ৰে পরিণত কর। হে বঙ্গীয় যুবকবৃন্দ, তোমাদের দেশের জন্য ইহা প্রয়োজন, সমুদয় জগতের জন্য ইহা প্রয়োজন । তোমাদের অন্তর্নিহিত ব্ৰহ্মশক্তি জাগাইয়া তোল ; সেই শক্তি তোমাদিগকে ক্ষুধা-তৃষ্ণ শীত-উষ্ণতা—সব কিছু সহ করিতে সমর্থ করিবে। বিলাসপুর্ণ গৃহে বসিয়া, সর্বপ্রকার সুখ-সম্ভোগে পরিবেষ্টিত থাকিয়া একটু সথের ধর্ম করা অন্যান্য দেশের পক্ষে শোভা পাইতে পারে, কিন্তু ভারতের অস্তরে ইহা অপেক্ষ উচ্চতর প্রেরণা বৰ্তমান । ভারত সহজেই প্রতারণা ধরিয়া ফেলে। তোমাদিগকে ত্যাগ করিতে হইবে । মহৎ হও । স্বাৰ্থত্যাগ ব্যতীত কোন মহৎ কার্যই সাধিত হইতে পারে না । পুরুষ স্বয়ং জগৎ স্বষ্টি করিবার জন্য স্বাৰ্থত্যাগ করিলেন, নিজেকে বলি দিলেন । তোমরা সর্বপ্রকার আরাম-স্বাচ্ছন্দ্য, নাম-যশ অথবা পদ—এমন কি জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়া মানবদেহের শৃঙ্খলদ্বারা এমন একটি সেতু নিৰ্মাণ কর, যাহার উপর দিয়া লক্ষ লক্ষ লোক এই জীবনসমুদ্র পার হইয়া যাইতে পারে। যাবতীয় কল্যাণ-শক্তিকে মিলিত কর । তুমি কোন পতাকার নিম্নে থাকিয়া যাত্রা করিতেছ, সেদিকে লক্ষ্য করিও না । তোমার পতাকা নীল সবুজ বা লোহিত, তাহা গ্রাহ করিও না ; সমুদয় রঙ মিশাইয়া প্রেমের শুভ্রবর্ণের তীব্র জ্যোতি প্রকাশ কর । আমাদের প্রয়োজন—কার্য করিয়া যাওয়া ; ফল যাহা, তাহা আপনি হইবে। যদি কোন সামাজিক নিয়ম তোমার ব্ৰহ্মত্বলাভের প্রতিকূল হয়, আত্মার শক্তির সম্মুখে তাহা টিকিতে পারিবে না । ভবিষ্যৎ কি হইবে, তাহা দেখিতে পাইতেছি না, দেখিবার জন্য আমার আগ্রহও নাই। কিন্তু আমি যেন দিব্যচক্ষে দেখিতেছি যে, আমাদের সেই প্রাচীন জননী আবার জাগিয়া উঠিয়া পুনর্বার নবযৌবনশালিনী ও পুর্বাপেক্ষ বহুগুণে মহিমান্বিত হইয়া তাহার সিংহাসনে বসিয়াছেন। শাস্তি ও আশীৰ্বাণীর সহিত র্তাহার নাম সমগ্র জগতে ঘোষণা কর । { সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪, বষ্টন ] কর্ম ও প্রেমে চিরকাল তোমাদেরই