পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২ স্বামীজীর বাণী ও রচনা ঋষিগণ উহার আবিষ্কর্তা মাত্র। স্থানে স্থানে এই ঋষিগণের নামের উল্লেখ আছে বটে, কিন্তু সেগুলি নামমাত্র । তাহারা কে ছিলেন, কি করিতেন, তাহাও আমরা জানি না । অনেক স্থলে তাহাদের পিতা কে ছিলেন, তাহাও ੋਜ। যায় না ; আর প্রায় সকলেরই জন্মস্থান ও জন্মকাল আমাদের অজ্ঞাত । বাস্তবিক এই ঋষিগণ নামের আকাঙ্ক্ষা করিতেন না, তাহারা সনাতন তবসমূহের প্রচারক ছিলেন এবং নিজের জীবনে সেই-সকল তত্ত্ব উপলব্ধি করিয়া আদর্শ জীবন যাপন করিবার চেষ্টা করিতেন । আবার যেমন আমাদের ঈশ্বর নিগুৰ্ণ অথচ সগুণ, সেইরূপ আমাদের ধর্মও কোন ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে ন, অথচ ইহাতে অনন্ত অবতার ও অসংখ্য মহাপুরুষের স্থান হইতে পারে । আমাদের ধর্মে মৃত অবতার, মহাপুরুম, ঋষি আছেন, আর কোন ধর্মে এত আছেন? শুধু তাহাই নহে, আমাদের ধর্ম বলে—কর্তমানে ও ভবিষ্যতে আরও অনেক মহাপুরুষ অবতারদিগের অভু্যদয় হইবে । ভাগবতে আছে—‘অবতারা হসংগ্যেয়া: স্বতরাং এই ধর্মে ब्रटेन নূতন ধর্মপ্রবর্তক, অবতার ইত্যাদিকে গ্রহণ করিবার কোন বাধা নাই। এই হেতু ভারতের ধর্মেতিহাসে যে-সকল অবতার ও মহাপুরুষের বিষয় বর্ণিত আছে, যদি প্রমাণিত হয় যে, তাহারা ঐতিহাসিক নহেন, তাত হইলেও আমাদের ধর্ম বিন্দুমাত্র আঘাত পাইবে না ; উহা পূর্বের মতোই দৃঢ় থাকিবে ; কারণ কোন ব্যক্তিবিশেষের উপর এই ধর্ম প্রতিষ্ঠিত নহে—সনাতন সত্যসমূহের উপরই ইহা স্থাপিত। পৃথিবীর সকল লোককে জোর করিয়া কোন ব্যক্তিবিশেষকে মানাইবার চেষ্টা করা বৃথা ; এমন কি সনাতন ও সার্বভৌম তত্ত্বসমূহ দ্বারাও অনেককে একমতাবলম্বী করা কঠিন। তবে যদি কখন পুথিবীর অধিকাংশ লোককে ধর্মসম্বন্ধে একমতাবলম্বী করা সম্ভব হয়, তবে কোন ব্যক্তিবিশেষকে সকলে মার্ক—এরূপ চেষ্টা করিলে তাহা হইবে না, বরং সনাতন তত্ত্বসমূহে বিশ্বাসী হইয়া অনেকের একমতাবলম্বী হওয়া সম্ভব । অথচ আমাদের ধর্ম ব্যক্তিবিশেষের কথার প্রামাণ্য ও প্রভাব সম্পূর্ণরূপেই স্বীকার করিয়া থাকে—এ বিষয়ে আমি পুর্বেই বলিয়াছি। ‘ইষ্টনিষ্ঠা’রূপ যে অপুর্ব মত ‘আমাদের দেশে প্রচলিত, তাতাতে এই সকল অবতারগণের মধ্যে যাহাকে ইচ্ছা আদর্শ করিতে সকলকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয় | যে-কোন অবতারকে তোমার জীবনের আদর্শরূপে ও বিশেষ t