পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8. o স্বামীজীর বাণী ও রচনা হুইলে তাহার নিজত্ব’ কোথায় ? তাহার নিজত্ব’ তখন একেবারে লোপ পাইয়াছে। অতএব কর্মযোগ নিঃস্বার্থপরতা ও সৎকর্ম দ্বারা মুক্তি লাভ করিবার একটি ধর্ম ও নীতিপ্রণালী। কর্মযোগীর কোন প্রকার ধর্মমতে বিশ্বাস করিবার আবশ্বকতা নাই। তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস না করিতে পারেন, আত্মা-সম্বন্ধে অনুসন্ধান না করিতে পারেন, অথবা কোন প্রকার দার্শনিক বিচারও না করিতে পারেন, কিছুই আসে যায় না। র্তাহার বিশেষ উদ্দেশ্য নিঃস্বার্থপরতা লাভ করা এবং তাহাকে নিজ চেষ্টাতেই উহা লাভ করিতে হইবে। তাহার জীবনের প্রতি মুহূর্তই হইবে উহার উপলব্ধি, কারণ জ্ঞানী যুক্তি-বিচার করিয়া বা ভক্ত ভক্তির দ্বারা যে সমস্ত সমাধান করিতেছেন, তাহীকে কোন প্রকার মতবাদের সহায়তা না লইয়া কেবল কৰ্মদ্বারা সেই সমস্তারই সমাধান করিতে হইবে। এখন পরবর্তী প্রশ্ন : এই কর্ম কি ? জগতের উপকার করা-রূপ এই ব্যাপারটি কি ? আমরা কি জগতের কোন উপকার করিতে পারি ? উচ্চতম দৃষ্টি হইতে বলিলে বলিতে হইবে, না ; কিন্তু আপেক্ষিক ভাবে ধরিলে ‘ই’ বলিতে হইবে । জগতের কোন চিরস্থায়ী উপকার করা যাইতে । পারে না; তাহা যদি করা যাইত, তাহা হইলে ইহা অার এই জগৎ থাকিত । না। আমরা পাচ মিনিটের জন্য কোন ব্যক্তির ক্ষুধা নিবৃত্ত করিতে পারি, । কিন্তু সে আবার ক্ষুধার্ত হইবে। আমরা মানুষকে যাহা কিছু স্থখ দিতে পারি, । তাহা ক্ষণস্থায়ী মাত্র। কেহই এই নিত্য-আবর্তনশীল মুখ-দুঃখরাশি একেবারে চিরকালের জন্ত দূর করিতে পারে না। জগৎকে কি কাহাকেও কোন নিত্য-স্থখ দেওয়া যাইতে পারে ? না, তাহা দেওয়া যাইতে পারে না। সমুদের কোথাও গহবর স্বষ্টি না করিয়া একটি তরঙ্গও তুলিতে পারা যায় না। মাহুষের প্রয়োজন ও লোভের অনুপাতে জগতে ভালোর সমষ্টি বরাবর একই প্রকার, সর্বদাই সমান। উহা বাড়ানো বা কমানো যায় না। বর্তমানকাল পর্যন্ত পরিজ্ঞাত মহন্তজাতির ইতিহাস আলোচনা কর। সেই পূর্বের মতোই সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, পদমর্যাদার তারতম্য দেখিতে পাই নাকি ? ক্ৰেই পনী, কেহ দরিদ্র , কেহ উচ্চপদস্থ, কেহ নিম্নপদস্থ ; কেহ স্বস্ব, কেহ বা অৱস্থ—তাই নয় কি ? প্রাচীন মিশরবাসী, গ্রীক ও রোমানদের যে-অবস্থা