পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 ३ বাণী ও রচনা দুইটি একত্র করিলে একটি অখণ্ড বস্তু হয়। একজন পতনের দিকটা দেখিয়৷ দুঃখবাদী হন ; আর একজন উত্থানের দিকটা দেখেন এবং স্থখবাদী হন। বালক যখন বিদ্যালয়ে যায়—পিতামাতা তাহার যত্ন লইতেছেন, তখন বালকের পক্ষে সবই স্থখকর মনে হয়। তাহার অভাব খুব সামান্ত, স্বতরাং সে খুব সুখবাদী। কিন্তু বৃদ্ধ—বিচিত্র অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অপেক্ষাকৃত শান্ত হইয়াছেন, তাহার উৎসাহ আরও মন্দীভূত হইবে। এইরূপে প্রাচীন জাতিগুলি—ষাহীদের চতুর্দিকে কেবল পূর্ব গৌরবের ধ্বংসাবশেষ—তাহারা নূতন জাতিগুলি অপেক্ষা কম আশাশীল। ভারতবর্ষে একটি প্রবাদ আছে— ‘হাজার বছর শহর, আবার হাজার বছর বন । শহরের এই বনে পরিবর্তন এবং বনের শহরে পরিবর্তন সর্বত্র চলিয়াছে। মানুষ এই চিত্রের যখন যে দিকটি দেখে, তখন সে তদনুযায়ী মুখবাদী বা দুঃখবাদী হয়। এখন আমরা সাম্যভাব সম্বন্ধে বিচার করিব। এই স্বর্ণযুগের ধারণ অনেকের পক্ষে কর্ম করিবার শক্তি—প্রচণ্ড প্রেরণাশক্তি। অনেক ধর্মেই ধর্মের একটি অঙ্গরূপে প্রচারিত হয় : ঈশ্বর জগৎ শাসন করিতে আসিতেছেন, এবং মানুষের ভিতর আর কোন অবস্থার প্রভেদ থাকিবে না। যাহার এই মৃতবাদ প্রচার করে, তাহারা অবশু গোড়ী, এবং গোড়ারাই সর্বাপেক্ষ। অকপট । খ্ৰীষ্টধর্মও ঠিক এই গোড়ামির মোহ দ্বারাই প্রচারিত হইয়াছিল, ইহারই জন্য গ্রীক ও রোমক ক্রীতদাসগণ এই ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হুইয়াছিল। তাহারা বিশ্বাস করিয়াছিল—এই ধর্মে তাহাদিগকে অণর দাসত্ব করিতে হইবে না, তাহারা যথেষ্ট খাইতে পরিতে পাইবে ; সেইজন্যই তাহারা খ্ৰীষ্টধর্মের পতাকাতলে সমবেত হইয়াছিল। প্রথমে যাহারা উহা প্রচার করিয়াছিল, তাহারা অবহু গোড়া অজ্ঞ ছিল, কিন্তু তাহারা প্রাণের সহিত ঐসব কথা বিশ্বাস করিত। বর্তমানকালে এই স্বর্ণযুগের আকাঙ্ক্ষা—সাম্য, স্বাধীনতা ও ভ্রাতৃত্বের আকার ধারণ করিয়াছে। ইহাও গোড়ামি । যথার্থ সাম্যভাব জগতে কখনও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই এবং কখন হইতেও পারে না। এখানে কি করিয়া আমরা সকলে সমান হইব ? এই অসম্ভব ধরনের সাম্য বলিতে সমষ্টিবিনুশিই বুঝায়! জগতের এই যে বর্তমান রূপ, তাহার কারণ কি ?— গষ্টেশ্ব-জভাৰ। জগতের আমি অবস্থায়—ম্বর পূর্বে সম্পূর্ণ সাম্যভাব থাকে। তবে বিশ্বগঠনকারী বিভিন্ন শক্তির উদ্ভব হয় কিরূপে –বিরোধ