পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্মযোগের জাদ} 386. উপনীত হইতে হইবে। এই জন্তই আমাদের কর্মরহন্ত জানা প্রয়োজন । জগৎকে সম্পূর্ণরূপে স্বৰী করিবার যাবতীয় ধারণা গোড়াদিগকে কর্মে প্রবৃত্ত করিবার পক্ষে ভালই হইতে পারে ; কিন্তু আমাদের জানা উচিত যে, গোড়ামিদ্বারা ভালও যেমন হয়, মন্দও তেমনি হয়। কর্মৰোগী জিজ্ঞাসা করেন, কর্ম করিবার জন্ত মুক্তির সহজাত অনুরাগ ব্যতীত উদ্দেগুমূলক কোন প্রেরণার প্রয়োজন কি ? সাধারণ উদ্দেশু বা অভিসন্ধির গণ্ডি অতিক্রম কর। কর্মেই তোমার অধিকার, ফলে নয়—‘কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।’ কর্মযোগী বলেন, মানুষ এ তত্ত্ব অবগত হইয়া অভ্যাস করিতে পারে। যখন লোকের উপকার করিবার ইচ্ছা তাহার মজ্জাগত হইয়া যাইবে, তখন আর তাহার বাহিরের কোন প্রেরণার প্রয়োজন থাকিবে না। লোকের উপকার কেন করিব ?—ভাল লাগে বলিয়া । আর কোন প্রশ্ন করিও না । ভাল কাজ কর, কারণ ভাল কাজ করা ভাল। কর্মযোগী বলেন, স্বগে যাইবে বলিয়া ষে ভাল কাজ করে, সেও নিজেকে বদ্ধ করিয়া ফেলে। এতটুকু স্বার্থযুক্ত অভিসন্ধি লইয়া যে কৰ্ম করা যায়, তাহ মুক্তির পরিবর্তে আমাদের পায়ে আর একটি শৃঙ্খল পরাইয়া দেয়। যদি আমরা মনে করি, এই কর্ম দ্বারা আমরা স্বগে যাইব, তাহা হইলে আমরা স্বৰ্গ-নামক একটি স্থানে আসক্ত হইব । আমাদিগকে স্বর্গে গিয়া স্বর্গমুখ ভোগ করিতে হইবে ; উহt আমাদের পক্ষে অার একটি বন্ধনস্বরূপ হইবে । অতএব একমাত্র উপায়—সমুদয় কর্মের ফল ত্যাগ করা, অনাসক্ত । হওয়া । এইটি জানিয়া রাখে ; জগৎ আমরা নয়, আমরাও এই জগৎ নই ; বাস্তবিক আমরা শরীরও নই, আমরা প্রকৃতপক্ষে কর্ম করি না। আমরা আত্ম—চিরস্থির, চিরশাস্ত। আমরা কেন কিছুর দ্বারা বদ্ধ হইব ? আমাদের রোদনেরও কোন কারণ নাই, আত্মার পক্ষে কাদিবার কিছুই নাই। এমন কি, অপরের দুঃখে সহানুভূতিসম্পন্ন হইয়াও আমাদের কাদিবার কোন প্রয়োজন নাই। এইরূপ কান্নাকাটি ভালবাসি বলিয়াই আমরা কল্পনা কৰি যে, ঈশ্বর তাহার সিংহাসনে বসিয়৷ এইরূপে কাদিতেছেন । ঈশ্বর —দিবেনই বা কেন ? ক্ৰন্দন তো বন্ধনের চিহ্ন—দুর্বলতার চিহ্ন। একবিন্দু

  • *ौड, २॥६१