পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8& স্বা(জীর বাণী ও রচনা চোখের জল যেন না পড়ে। এইরূপ হইবার উপায় কি ? 'সম্পূর্ণ অনাসক্ত হও’—বলা খুব ভাল বটে, কিন্তু হইবার উপায় কি ? অভিসন্ধি-শূন্ত হইয যে-কোন ভাল কাজ করি, তাহ আমাদের পায়ে একটি নূতন শৃঙ্খল স্বষ্টি না করিয়৷ যে শৃঙ্খলে আমরা বদ্ধ রহিয়াছি, তাহারই একটি শিকলি ভাঙিয়া দেয়। আমরা প্রতিদানে কিছু পাইবার আশা না করিয়৷ যে-কোন সৎচিন্ত৷ চারিদিকে প্রেরণ করি, তাহা সঞ্চিত হইয়া থাকিবে—আমাদের বন্ধন-শৃঙ্খলের একটি শিকলি চূর্ণ করিবে, এবং আমরা ক্রমশই পবিত্রতর হইতে থাকিব— যতদিন না পবিত্রতম মানবে পরিণত হই। কিন্তু লোকের নিকট ইহা যেন কেমন অস্বাভাবিক ও অত্যধিক দার্শনিক এবং কার্যকর অপেক্ষা বেশী তাত্ত্বিক বলিয়া বোধ হয়। আমি ভগবদগীতার বিরুদ্ধে অনেক যুক্তিতর্ক পড়িয়াছি, অনেকেই বলিয়াছেন—অভিসন্ধি বা উদ্দেশ্য ব্যতীত মানুষ কাজ করিতে পারে না। ইহার গোড়ামির প্রভাবে কৃত কর্ম ব্যতীত কোন ‘নিঃস্বার্থ কার্য কখন দেখে নাই, সেইজন্যই এইরূপ বলিয়া থাকে। উপসংহারে অল্প কথায় তোমাদের নিকট এমন এক ব্যক্তির বিষয়ে বলিব, ধিনি কর্মযোগের এই শিক্ষ। কার্ষে পরিণত করিয়াছেন। সেই ব্যক্তি ৰুদ্ধদেব ; একমাত্র তিনি ইহা সম্পূর্ণরূপে কার্ষে পরিণত করিয়াছিলেন। বুদ্ধ ব্যতীত জগতের অন্যান্য মহাপুরুষগণের সকলেই বাহ প্রেরণার বশে নিঃস্বার্থ কর্ম প্রবৃত্ত হইয়াছেন । কারণ একমাত্র তাহাকে ব্যতীত জগতের সকল মহাপুরুষকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইতে পারে ; এক শ্রেণী বলেন–র্তাহারা ঈশ্বরের অবতার, পৃথিবীতে অবতীর্ণ হইয়াছেন, অপর শ্রেণী বলেন–র্তাহারা ঈশ্বরের প্রেরিত বার্তাবহ ; উভয়েরই কার্যের প্রেরণা-শক্তি বাহির হইতে আসে । আবি যত উচ্চ আধ্যাত্মিক ভাষা ব্যবহার করুন না কেন, তাহারা বহিজগৎ হইতেই পুরস্কার আশা করিয়া থাকেন। কিন্তু মহাপুরুষগণের মধ্যে একমাত্র বুদ্ধই বলিয়াছিলেন, ‘আমি ঈশ্বর সম্বন্ধে তোমাদের ভিন্ন ভিন্ন মত শুনন্তে চাই না। আত্মা সম্বন্ধে সূক্ষ্ম সুন্ন মতবাদ বিচার করিয়াই বা কি হইবে । ভাল হও এবং ভাল কাজ কর। ইহাই তোমাদের মুক্তি দিবে, এবা সত্যু tহাই হউক না, সেই সত্যে লইয়া যাইবে।” তিনি আচরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তিগত অভিসন্ধিবর্জিত ছিলেন ; আর কো মানুষ র্তাহ অপেক্ষা বেশী কাজ করিয়াছেন ? ইতিহাসে এমন একটি