পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথ্যপঞ্জী 88\ס বিষয় প্রবেশ ঃ এই গ্রন্থের অবতরণিকায় স্বামীজী বলিয়াছেন : যোগশাস্ত্র শুধু কতকগুলি তত্বের উপর স্থাপিত নয়। যদি ঈশ্বর থাকেন তো তাহাকে দর্শন করিতে হইবে, যদি আত্মা বলিয়া কোন পদার্থ থাকে, তাহ হইলে তাহ উপলব্ধি করিতে হইবে ; তাহা ন হইলে বিশ্বাস না করাই ভাল, ভগু অপেক্ষা স্পষ্টবাদী নাস্তিক ভাল ; রাজযোগ-বিদ্যা সত্য লাভ করিবার প্রকৃত কার্যকর ও সাধনোপযোগী বৈজ্ঞানিক প্রণালী । এই নির্দিষ্ট প্রণালী অনুসারে দীর্ঘদিন সাধন করিতে হয়। স্বামীজী বলিতেছেন : তুমি যদি জ্যোতির্বিদ হইতে ইচ্ছ। কর, আর ঘরে বসিয়া জ্যোতিষ জ্যোতিষ বলিয়া কেবল চীৎকার করিতে থাকে, তাহা হইলে কখনই তুমি জোতিষশাস্ত্রে অধিকারী হইতে পরিবে না ...তোমাকে মান-মন্দিরে যাইতে হইবে, দূরবীক্ষণ-ষন্ত্রের সাহায্যে তারা ও গ্রহগুলি পর্যবেক্ষণ করিয়া তদ্বিষয়ে আলোচনা করিতে হইবে, তবেই তুমি জ্যোতির্বিদ হইতে পরিবে ; সকল বিদ্যা সম্বন্ধেই এইরূপ। রাজযোগ-বিদ্যাও মাতুষকে ঐন্ধপ একটি কার্যকর উপায় দেখাইয়া দেয় ; তবে বৈজ্ঞানিকগণ নানাবিধ যন্ত্রাদি উদ্ভাবন করিয়া উহাদের সাহায্যে যেমন বহির্জগতের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পদার্থগুলি বিশ্লেষণ করিতে অগ্রসর হন, রাজযোগীও সেইরূপ একটি স্বতন্ত্র যন্ত্রের সাহাষ্যে র্তাহার আভ্যন্তরীণ অবস্থাসমূহ পর্যবেক্ষণ করিতে উদ্যত হন ; ঐ যন্ত্র তাহার ‘মন’ ; উহার শক্তিকে একত্র করিলে তিনি যে শুধু তাহার আভ্যস্তর জগতের তথ্য অবগত হন তাহা নয়, তিনি ইচ্ছা করিলে উহা হইতে সমগ্র অন্তর্জগৎ ও বহির্জগতের উপর আধিপত্যও লাভ করিতে পারেন, ইহাই রাজযোগের মূল কথা ; ইহার সাধনকেই ষোগের অষ্টাঙ্গ সাধন-মার্গ বলে, স্বামীজী রাজযোগের বিভিন্ন বক্তৃতায় ঐগুলিই বিস্তারিত ও বিজ্ঞান-সম্মত ভাবে আলোচনা করিয়াছেন । এই বিষয়ে সর্বসাধারণকে আশ্বাস দিয়া তিনি বলিয়াছেন : রাজযোগ শিক্ষা করিতে হইলে তোমার ধর্ম যাহাই হউক না কেন—তুমি আস্তিক হও, মাস্তিক হও, ইহুদী হও, বৌদ্ধ হও অথবা খ্ৰীষ্টানই হও—তাহাতে কিছুই আসে যায় না। তুমি মানুষ, ইহাই যথেষ্ট । স্বত্রকার পতঞ্জলি বলিতেছেন, "জাতিদেশকালসময়ানবচ্ছিন্না: সার্বভৌম। মহাব্ৰতম্ (সাধনপাদ, ৩১ ) । ইহার সাধনগুলি—অহিংসা, সত্য, অস্তেয়