পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিয়া পরিগণিত হহঁত না, যদি না মধুরতম অশ্বাসপুৰ্ণ এই পরম জাহান তাহার শাস্ত্ৰে ধ্বনিত হইত: ‘শোন অমৃতের পুত্ৰগণ। বাহারা দিব্যধামবাসী তাহারাও শোন! অামি সেই মহান পুরাণ পুরুষের দৰ্শন পাইয়াছি— ঘিনি সকল অন্ধকারের পারে—সকল অজ্ঞানের উধে! তোহাকে জানিয়া তোমরাও মৃত্যুকে অতিক্ৰম করিবে।’ এই তো সেই বাণী, যাহার জন্যই বাকী সব কিছু আছে, এবং চিরদিন রহিয়াছে। ইহাই হইতেছে সেই পরম উপলদ্ধি, যাহার মধ্যে অন্য সব অনুভূতি মিশিয়া যাইতে পারে। “আমাদের বৰ্তমান কৰ্তব্য’ বিষয়ক ভাষণে স্বামীজী যখন সকলকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানান —এমন একটি মন্দির-গঠনে সাহায্য করিতে হইবে, যেখানে দেশের প্রত্যেকটি উপাসক উপাসনা করিতে পারে, যে মন্দিরের পবিত্ৰ বেদীতে শুধু ‘ওঁ এই শব্দব্ৰহ্ম প্ৰতিষ্ঠিত থাকিবে, তখন মামাদের মধ্যে কেহ কেহ এই বাণীর মধ্যে অার ও বিরাট একটি মন্দিরের আভাস পাইয়া থাকেন, সে মন্দির স্ব-স্বরপে বিরাজিতা অামাদের দেশমাতৃকা ভারতবৰ্ষ স্বয়ং —এবং উহাতে শুধু ভারতবর্ষের নয়, সমগ্ৰ মানবজাতির ধৰ্মসাধনার পথগুলি কেন্দ্ৰাভিমুখী হইতেছে; সেই পুণ্যপীঠের পাদমূলে, যেখানে প্ৰতিষ্ঠিত আছে সেই প্ৰতীক যাহা কোন প্ৰতীকই নয়, সেই নাম যাহা শব্দাতীত। সকল উপাসনা, সকল ধৰ্মপদ্ধতি চলিয়াছে ইহারই অভিমুখে — ইহার বিপরীত দিকে নয়। পৃথিবীর অতি নিষ্ঠাপরায়ণ ধৰ্মগুলির সহিত ভারত সমস্বরে ঘোষণা করে; সাধনার অগ্ৰগতি দৃষ্ট হইতে অদৃষ্ট, বহু হইতে একে, নিম্ন হইতে উচ্চতর স্তরে, সাকার হইতে নিরাকারে—-কখনও ইহার বিপরীতে নয়। ভারতের বৈশিষ্ট্য এইখানেই যে, যে-কোন স্থানের এবং যে কোন প্ৰকারের হউক না কেন, প্ৰতিটি অকপট ধৰ্মবিশ্বাসকেই সে মহান উৰ্ব্বগতির সোপান-স্বৰূপ মনে করে এবং প্ৰত্যেকটিকেই সে সহানুভূতি জানায় ও আশ্বাস দিয়া থাকে। হিন্দুধর্মের এই প্ৰবক্তার মধ্যে যদি এমন কিছু থাকিত, যাহা তাহার নিজস্ব, তবে স্বামী বিবেকানন্দের যথাৰ্থ মান ক্ষুন্ন হইত। গীতায় কৃষ্ণের ন্যায় বুদ্ধের স্থায়, শঙ্করাচাৰ্ষের ন্যায়— ভারতীয় চিন্তাজগতের সকল অ্যাচার্থের স্নায় তাহার বাক্যসমুহ বেদ ও উপনিষদের উদ্ধতি দ্বারাই সমৃদ্ধ। যে রত্নরাজি ভারত নিজেরই মধ্যে ধারণ করিয়া রহিয়াছে, কেবলমাত্ৰ সেগুলির প্রকাশক ৰূপে—ব্যাখ্যাতাৰূপেই “স্বামীজী বিরাজমান। যদি তিনি জন্মগ্ৰহণ নাও