পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:నెbr স্বামীজীর বাণী ও রচনা তারপর সে ব্যক্তি আর কি করেছে কিনা, দোষী কি নির্দোষ, তার আর জিজ্ঞাসা-পড়া নেই, একেবারে নিয়ে পুরলে সেই বাস্তিলে ; সেখান থেকে বড় কেউ আর বেরুত না । রাজাদের প্রণয়িনীরা কারু উপর চটলে রাজার কাছ থেকে ঐ শীলটা করিয়ে নিয়ে সে ব্যক্তিকে বাস্তিলে ঠেলে দিত। পরে যখন দেশস্থদ্ধ লোক এ সব অত্যাচারে ক্ষেপে উঠল, 'ব্যক্তিগত স্বাধীনতা’, ‘সব সমান’, ‘ছোট বড় কিছুই নয়?—এ ধ্বনি উঠালো, পারির লোক উন্মত্ত হয়ে রাজারাণীকে আক্রমণ করলে, সে সময় প্রথমেই এ মানুষের অত্যাচারের ঘোর নিদর্শন বাস্তিল ভূমিসাৎ করলে, সে স্থানটায় এক রাত ধ’রে নাচগান আমোদ করলে। তারপর রাজা পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাকে ধ’রে ফেললে, রাজার শ্বশুর অষ্ট্রিয়ার বাদশা জামায়ের সাহায্যে সৈন্য পাঠাচ্ছেন শুনে, প্রজার ক্রোধে অন্ধ হয়ে রাজারাণীকে মেরে ফেললে, দেশস্থদ্ধ লোকে স্বাধীনতা সাম্যের’ নামে মেতে উঠল, ফ্রাস প্রজাতন্ত্র (republic) হ’ল ; অভিজাত ব্যক্তির মধ্যে যাকে ধরতে পারলে তাকেই মেরে ফেললে, কেউ কেউ উপাধি-টুপাধি ছেড়ে প্রজার দলে মিশে গেল। শুধু তাই নয়, বললে দুনিয়া-স্বদ্ধ লোক, তোমরা ওঠ, রাজাফাজা অত্যাচারী সব মেরে ফেল, সব প্রজা স্বাধীন হোক, সকলে সমান হোক!’ তখন ইউরোপ-সুদ্ধ রাজারা ভয়ে অস্থির হয়ে উঠল—এ আগুন পাছে নিজেদের দেশে লাগে, পাছে নিজেদের সিংহাসন গড়িয়ে পড়ে যায় তাই তাকে নেবাবার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে চারিদিক থেকে ফ্র'স আক্রমণ করলে । এদিকে প্রজাতন্ত্রের কর্তৃপক্ষেরা লা পাত্রি আ র্দাজে’—জন্মভূমি বিপদে—এই ঘোষণা ক’রে দিলে ; সে ঘোষণা আগুনের মতো দেশময় ছড়িয়ে প’ড়ল । ছেলেবুড়ো, মেয়েমদ ‘মার্সাইএ মহাগীত ( La Marseillaise ) গাইতে গাইতে—উৎসাহপূর্ণ ফ্রাসের মহাগীত গাইতে গাইতে, দলে দলে জীর্ণবসন, সে শীতে নগ্নপদ, অতাল্পান্ন ফরাসী প্রজা-ফৌজ বিরাট সমগ্র ইউরোপী চমুর সম্মুখীন হ’ল, বড় ছোট ধনী দরিদ্র সব বন্দুক ঘাড়ে বেরুল, পরিত্রাণায়.বিনাশায় চ ছক্কতাম' বেরুল। সমগ্র ইউরোপ সে বেগ সহ করতে পারলে না। ফরাসী জাতির অগ্রে সৈন্যদের স্বন্ধে দাড়িয়ে এক বীর—তার অঙ্গুলি-হেলনে ধরা কাপতে লাগলো, তিনিই ন্যাপোলেঙ্গ । ১ গীত, ৪৮