পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৬ স্বামীজীর বাণী ও রচনা সরকার বলছেন। ও কালোর মধ্যে আবার এক পোচ কম বেশী বোঝা যায় না ; সরকার বলছেন, সব নেটিভ। সেজেগুজে বসে থাকলে কি হবে বলে ? ও টুপি-টাপা মাথায় দিয়ে আর কি হবে বলো? যত দোষ হিদুর ঘাড়ে ফেলে সাহেবের গা ঘেঁষে দাড়াতে গেলে, লাথি-বাটার চোটটা বেশী বই কম পড়বে না। ধন্য ইংরেজরাজ ! তোমার ধনে-পুত্রে লক্ষ্মী লাভ তো হয়েছেই, আরও হোক, আরও হোক। কপনি, ধুতির টুকরো - রে বাচি । তোমার কৃপায় শুধু-পায়ে শুধু-মাথায় হিল্লি দিল্লি যাই, তোমার দয়ায় হাত চুবড়ে সপাসপ দাল-ভাত খাই। দিশি সাহেবিত্ব লুভিয়েছিল আর কি, ভোগ দিয়েছিল আর কি। দিশি কাপড় ছাড়লেই, দিশি ধর্ম ছাড়লেই, দিশি চালচলন ছাড়লেই ইংরেজ রাজা মাথায় করে নাকি নাচবে গুনেছিলুম, করতেও যাই আর কি, এমন সময় গোরা পায়ের সবুট লাথির হুড়োহুড়ি, চাবুকের সপাসপ! পালা পাল, সাহেবিতে কাজ নেই, নেটিভ কবলা । ‘সাধ করে শিখেছিছু সাহেবানি কত, গোরার বুটের তলে সব হৈল হত । ধন্য ইংরেজ সরকার ! তোমার ‘তত্থং তাজ অচল রাজধানী হউক। আর যা কিছু সাহেব হবার সাধ ছিল, মিটিয়ে দিলে মার্কিন-ঠাকুর। দাড়ির জালায় অস্থির,কিন্তু নাপিতের দোকানে ঢোকবামাত্রই বললে ‘ও চেহারা এখানে চলবে না' ! মনে করলুম, বুঝি পাগড়ি-মাথায় গেরুয়া রঙের বিচিত্র ধোকড়া-মন্ত্র গায়, অপরূপ দেখে নাপিতের পছন্দ হ’ল না ; তা একটা ইংরেজি কোট আর টোপা কিনে আনি ৷ আনি আর কি—ভাগ্যিস একটি ভদ্র মার্কিনের সঙ্গে দেখা ; সে বুঝিয়ে দিলে যে বরং ধোকড়া আছে ভাল, ভদ্রলোকে কিছু বলবে না, কিন্তু ইউরোপী পোশাক পরলেই মুশকিল, সকলেই তাড়া দেবে। আরও দু একটা নাপিত ঐ প্রকার রাস্তা দেখিয়ে দিলে। তখন নিজের হাতে কামাতে ধরলুম। থিদেয় পেট জলে ষায়, খাবার-দোকানে গেলুম, অমুক জিনিসটা দাও ; বললে নেই’। ‘ঐ যে রয়েছে । ‘ওহে বাপু সাদা ভাষা হচ্চে, তোমার এখানে বসে থাবার জায়গা নেই । ‘কেন হে বাপু ? তোমার সঙ্গে যে খাবে, তার জাত যাবে। তখন অনেকটা মার্কিন মুলুককে দেশের মতো ভাল লাগতে লাগলে । ষাক পাপ কালা আর ধলা, আর এই নেটিভের মধ্যে উনি পাচ পো আর্য রক্ত, উনি চার পো, উনি দেড় ছটাক কম, ইনি আধ ছটাক, আধ কাচ্চ বেশী ইত্যাদি—বলে 'ছুচোর গোলাম চামচিকে, তার মাইনে চোদ্ধ