পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি

বন্ধুর প্রতি আক্রোশে তাঁহার মনে পড়িল না যে, সপ্তদশ-বর্ষীয় পুত্রের দুশ্চরিত্রতার ভূরি-ভূরি প্রমাণ পাইয়াই তিনি অনেক চেষ্টায় তাড়াতাড়ি তাহার বিবাহ দিয়া চরিত্রসংশোধন করিতে চাহিয়াছিলেন। যে কার্য্য শাসনভয়প্রদর্শন প্রভৃতিতে তাঁহাদের দ্বারা সম্পন্ন হয় নাই, একটি ভয়চকিতা দ্বাদশবর্ষীয়া বালিকার শক্তিতে তাহা হইল না বলিয়াই তাঁহারা জাতক্রোধ হইয়া উঠিলেন। দুরূহ কার্য্যে তাহার সহায় হইলেন না, সান্ত্বনা দিলেন না, সহানুভূতি দেখাইলেন না। পশুপ্রকৃতি স্বামীর চিত্তবিনোদনে অসমর্থ বলিয়া তাঁহারাও তাহাকে নির্য্যাতন করিতে ছাড়িলেন না। মানুষ দুর্ব্বলের প্রতি এমনি করিয়াই অবিচার করে।

 স্বামীদত্ত আঘাতের অলঙ্কার-চিহ্ন সর্ব্বাঙ্গে বহন করিয়া, তাঁহারই স্মরণার্থ বাকী জীবনের সমস্ত সুখ-সাধে জলাঞ্জলি দিয়া, অনেক দিনের পর সত্যবতী আবার তাহার স্নেহময় পিতৃক্রোড়ের নিরাপদ আশ্রয়নীড়ে ফিরিয়া আসিল। বাপের চোখের জলের সহিত চোখের জল মিলাইয়া সে আজ নিজের জন্য কাঁদিতে পারিল না। তাহার জ্বালাময় অশ্রুহীন নেত্র নিয়ত অর্থহীনভাবে চাহিয়া থাকে। মুখে চোখে শোক বেদনার কোন ছায়া ফুটে না। শান্তি বা