পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি

মুক্তি দিয়া গিয়াছেন। বেশ্যালয়ে অত্যধিক মদ্যপানে যকৃৎ বিদীর্ণ হইয়া তাঁহার অকস্মাৎ মৃত্যু ঘটিয়াছে। শুনিয়া বাড়ীর আর সকলের সহিত সেও প্রথমটা খানিক কাঁদিয়াছিল। তারপর, হাতের লোহা, চুড়ী খুলিয়া, সিঁদূর মুছিয়া শান্তমুখে বিধবার বেশ গ্রহণ করিল।

 এবার ত্রিপুরাচরণ মেয়েকে লইয়া যাইতে চাহিলেন— কেহ আর কোন আপত্তি করিল না। ‘অপয়া’ ‘রাক্ষসী’ বধূ বিদায় হওয়াই সংসারের পক্ষে মঙ্গল—এই বয়সে যাহার অনাচারে স্বামী মরিল, তাহার সংস্পর্শে না জানি আবার কি বিপদ্ ঘটিবে?

 শ্বাশুড়ী কাঁদিয়া কহিলেন—“বাছা আমার যে ক’দিন বেঁচে ছিল, এ হতভাগী রাক্ষুসীর জ্বালায় হাড়েনাড়ে জলেপুড়ে ছাই হয়ে গেল। এক দিনের তরে সংসারের সুখ পেয়ে গেল না। ওর নিশ্বাসে-নিশ্বাসে শুখিয়ে কাট হ’য়ে গেল। নৈলে সে কি আমার বাবার ছেলে? ওর জ্বালাতেই না মন্দসঙ্গ কর‍্তে শিখেছিল, নৈলে বাছা আমার কখন উপরপানে চোক তুলে চাইতে জান‍্ত না। দেখ‍্চ না, রাঁড় হয়ে যেন ষাঁড় হয়েছে। সে চোরের মতন ভয়ে-ভয়ে চাউনিও নেই, কিছুই নেই, ওর আর কি? যেতে দুঃখিনীর ধন আমারই গেল।”