পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
স্রোতের গতি

গোয়ালিনী যশীর মা, তাহার দুই যুবতী পুত্ত্রবধূ আর কৃষাণ বধূ অনঙ্গ। ইহাদের শোচনীয় দুরবস্থার বিষয় ইহাদের বোধগম্য করান এতই কঠিন ও বিপদসঙ্কুল যে, একদিনেই তাহাদের অজ্ঞানতা-অন্ধকার নাশের সাধ অমিয়ার মিটিয়া গিয়াছিল। বধূদ্বয়ের সহিত তাহাকে কথা বলিতে দেখিয়াই শ্বাশুড়ী সভয়ে মীনার আশ্রয় লইয়াছিল—‘মেম-দিদিমণি’র পরামর্শে তাহার শিশুবুদ্ধি বধূরা গির্জ্জায় গিয়া ‘কীষ্টান’ হইয়া না বসে! গ্রামে এমন দুর্ঘটনা আরও একবার ঘটিয়া ছিল। তাই অমিয়ার সাজসজ্জা, সকলের সহিত কথা বলা, একা যেখানে সেখানে বেড়াইতে যাওয়া এই সব অকাট্য প্রমাণ তাহাকে পল্লীনারীদের কাছে ‘কীষ্টান’ আখ্যা দিয়াছিল। হিন্দু মেয়ের নাকি এত বয়স পর্য্যন্ত বিবাহ হইতে বাকী থাকে?

 এই সব নিরক্ষর বুদ্ধিহীনা মেয়েদের শিক্ষা দিয়া তাহাদের অবস্থার কথা বুঝান যে কত কঠিন, তাহা সে যেমন অন্তরে অন্তরে অনুভব করিতেছিল, সেই সঙ্গে একটা নূতন চিন্তার ধারাও যেন তাহার মনের ভিতর দিয়া অলক্ষ্যে বহিয়া যাইতেছিল। বুঝাইয়া লাভই বা কি? শিক্ষা দিয়া,— সাহায্য দিয়া সে ত ইহাদের নূতন করিয়া গড়িয়া তুলিতে পারিবে না। তবে মিছামিছি তাহাদের শান্তির সংসারে