পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
স্রোতের গতি

অমিয়া অপ্রসন্ন-হাস্যে কহিল―“সবই ত সাফ্‌ আছে, তার ময়লা হবার ভয়! কিন্তু সকালবেলা তোমার এ কি খেলা হ’চ্চে শুনি। উত্তম কোথা গেল, তাকে ডাক্‌লেও ত হ’ত?”

 ফুলের টবগুলি যথাস্থানে সাজাইয়া, টেবিল চেয়ারগুলি কোথায় কি ভাবে রাখিলে মানাইবে মীনা মনে মনে তাহারই একটা খস্‌ড়া করিতেছিল; অমিয়ার কথায় মুখ না ফিরাইয়াই কহিল―“উত্তম এখন ত গরু দেখ্‌ছে। জাব দেবে, জল তুল্‌বে, সে ত এখন আর ছুটি পাবে না ভাই। ঠাকুরপো কখন এসে পড়্‌বেন, তার আগে ঘরটরগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে হবে। একেই ত মেয়েদের নিন্দে কর্‌তে পেলে তাঁর চতুর্ম্মুখ হয়। তাঁর বিশ্বাস, আহার নিদ্রা পরচর্চ্চা ছাড়া আমাদের মেয়ে-জাতটার আর কোন কাজ নেই।”

 মীনা ঝাড়ন দিয়া টেবিল চেয়ারের ধূলা ঝাড়িতে আরম্ভ করায় অমিয়া বিরক্তভাবে কহিল―“মেয়েরা যদি এত নির্গুণ তবে ওঁদের সংসার চালায় কে? বিনা মাইনের কেনা দাসী পেয়েছেন বলেই না এত বাবুগিরি! নিজেদের সুবিধের জন্যে মেয়েদের এমন করে চেপে না রাখ্‌লে কে ওঁদের রেঁধে ভাত দিত, ছেলের ধাই হত, জুতোর