পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পল্লীগানে বাঙ্গালী সভ্যতার ছাপ
১৫

 এই সৃষ্টিতত্ত্ব সম্বন্ধে অন্য একটি গান উদ্ধৃত করিয়া দেখাইতেছি পাঠক একটু লক্ষ্য করিয়া দেখিলেই বুঝিতে পারিবেন হিন্দু এবং মুসলমানের মিলনের সুর গানে পর্য্যন্ত পৌঁছিয়াছিল, অন্যত্র ত দূরের কথা। বাঙ্গালা সমাজতত্ত্বের ইতিহাস লিখিত হইলে এই সব বুঝিবার আরও সহজ পন্থা উদ্ভাবিত হইবে। হিন্দু ও মুসলমানের প্রাণের মিলন কতটুকু হইয়াছিল তাহা এই গান হইতেই বুঝিতে পারিবেন; হিন্দু ও মুসলমান tradition এর সংমিশ্রণে এক অপূর্ব্ব সম্পদ সৃষ্ট হইয়াছিল।

“মাবুদ আল্লার খবর না জানি।
আছেন নির্জ্জনে সাঁইনিরঞ্জন মণি,
সেথা নাই দিবা রজনী॥
অন্ধকারে হিমান্ত বায় ছিলে আপনি
সেই বাতাসে গৈবী আওয়াজ হ’ল তখনি।
ডিম্ব ভেঙ্গে আসমান জমিন গড়লেন রব্বানি॥
ডিম্ব রক্ষে আলে, ডিম্বের খেলা আদমে খেলে
অধীন আলেক বলে না ডুবিলে কি রতন মিলে?
ডুবিলে হবে ধনী॥ ”

 ইংরেজ সভ্যতার ছাপ “শিক্ষিত সাহিত্যে” যত লাগিয়াছে পল্লী সাহিত্যে তত লাগে নাই। আর পল্লী সাহিত্যে যতটুকু লাগিয়াছে তাহা ইহার বাহিরের জিনিষ—অর্থাৎ সভ্যতার কলকব্জা আসবাব পত্রের কথা। আমাদের প্রাচীন