পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

৶৹

 তাদের হাতে এই ধারার গভীরতা, এর বিশুদ্ধিতা চ’লে যায়, কৃত্রিমতায় নানাপ্রকারে বিকৃত হ’তে থাকে। অধিকাংশ আধুনিক বাউলের গানের অমূল্যতা চ’লে গেছে তা চল্‌তি হাটের শস্তা দামের জিনিষ হ’য়ে পথে পথে বিকোচ্চে। তা অনেক স্থলে বাঁধি বোলের পুনরাবৃত্তি এবং হাস্যকর উপমা তুলনার দ্বারা আকীর্ণ,—তার অনেকগুলোই মৃত্যুভয়ের শাসনে মানুষকে বৈরাগীদলে টান্‌বার প্রচারকগিরি। এর উপায় নেই, খাঁটি জিনিষের পরিমাণ বেশী হওয়া অসম্ভব, খাঁটির জন্যে অপেক্ষা কর্‌তে ও তাকে গভীর ক’রে চিন্‌তে যেধৈর্য্যের প্রয়োজন তা সংসারে বিরল। এইজন্যে কৃত্রিম নকলের প্রচুরতা চল্‌তে থাকে। এইজন্যে সাধারণতঃ যে-সব বাউলের গান যেখানে-সেখানে পাওয়া যায়, কি সাধনার কি সাহিত্যের দিক্‌ থেকে তার দাম বেশী নয়।

 তবু তার ঐতিহাসিক মূল্য আছে। অর্থাৎ এর থেকে স্বদেশের চিত্তের একটা ঐতিহাসিক পরিচয় পাওয়া যায়। অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে ভারতবর্ষীয় চিত্তের যে-একটি বড় আন্দোলন জেগেছিল সেটি মুসলমান অভ্যাগমরে আঘাতে। অস্ত্র হাতে বিদেশী এলো, তাদের সঙ্গে দেশের লোকের মেলা হোলো কঠিন। প্রথম অসামঞ্জস্যটা বৈষয়িক অর্থাৎ বিষয়ের অধিকার নিয়ে, স্বদেশের সম্পদের ভোগ নিয়ে। বিদেশী রাজা হ’লেই এই বৈষয়িক বিরুদ্ধতা অনিবার্য্য হ’য়ে ওঠে। কিন্তু মুসলমান শাসনে সেই বিরুদ্ধতার