পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা ।

স্বেচ্ছা তাহাই করিত, এইরূপে নানা বর্ণে মিশ্রিত হইয়া বহু বর্ণ সঙ্কর উৎপন্ন হইতে লাগিল, পরে বাণ রাজা লোকান্তরিত হইলে তাঁহার পুত্র পৃথু রাজ্যেশ্বর হইলেন, এবং বর্ণ বিষয়ক অতি বিশৃঙ্খলতা দৃষ্টি করিয়া সুশৃঙ্খলা করণাশয়ে ছত্রিশ জাতির প্রভেদ করিলেন, এবং যে যেমন অংশে উৎপন্ন হইয়াছিল, তাহার সেই পরিমাণে মান প্রদান করিলেন,তদবধি এই নিয়ম যথাক্রমে চলিতেছে,কিন্ত এক্ষণে আমাদিগের এই বঙ্গদেশীয় নব্য সম্প্রদায়ী মহোদয়গণ এই নিয়ম উচ্ছন্ন করিবার নিমিত্ত অতিশয় ব্যস্ত হইয়াছেন, আর এই বিষয়ক অনেক প্রস্তাবাদিও লিখিত হইয়াছে, এবং অনেকে বলেন, এই জাতিভেদ আমাদিগের সকল সুখের প্রতিবন্ধক স্বরূপ হইয়াছে, যদি এই জাতিভেদ না থাকিত তবে আমাদিগের এতাদৃশ দুরবস্থা কখনই ঘটিত না, আমরা অনায়াসে দেশ বিদেশ ত্রমণ পূর্ব্বক সকল দেশের আচার ব্যবহার এবং রীতি নীতি পদ্ধতি অবলোকন করিয়া বু্দ্ধি বৃত্তি চরিতার্থ করিতাম, এবং সমুদ্র পথে পোতাদি জলযান সকল লইয়া বাণিজ্যাদি করিতে সমর্থ হইতাম, এবং সকলে এক জাতি হইলে পরস্পর ঐক্য স্থাপন হইত, আর সেই ঐক্য প্রভাবে আমরা এই পরাধীনতা শৃঙ্খল হইতে মুক্ত হইতাম, এবং এই জাত্যভিমান না থাকিলে সকলেই অভিমানি হইয়া প্রধান হইবার মানসে বিদ্যাভ্যাসে যত্নবান হইত, এবং সকল লোকের মনাকাশে জ্ঞান সুর্য্য প্রকাশ হইয়া অজ্ঞান তিমির নষ্ট করিত, এবং আমাদিগের দেশ হইতে মিথ্যা প্রতারণা চৌর্য্য ও হত্যা প্রভৃতি দোষ সমূহ একেবারে দূরীভুত হইত,