পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।
৪৩

ত্রাণ পাইয়া প্রাণ সদৃশ সন্তানটীতে বঞ্চিত হইয়া অত্যল্প বয়সেই হৃদয় বিদারক অসহ্য শোকে অস্থির হয়েন, আহা! এই বাল্য বিবাহ চলিত না থাকিলে আর ঐ বালিকাগণকে এতাদৃশ অসহ্য যাতনা ভোগ করিতে হইত না। কিন্তু ইহার মধ্যে যিনি পরম সৌভাগ্য বশতঃ পুত্র সহিত ঐ বিপদ হইতে উদ্ধার হয়েন, তিনিও সম্পূর্ণরূপ সুখিনী হইতে পারেন না, হয় ত প্রসুতী বিষম সুতিকারোগে আক্রান্ত হইয়া অতীব যন্ত্রণা ভোগ করেন, নয় ত সন্তানটী অতিশয় রুগ্ন ও অতিশয় ক্ষীণ হইয়া পিতা মাতার যন্ত্রণা বৃদ্ধি করে, আর অল্প বয়স্কা বশতঃ মাতা সন্তানের লালন পালনে অসমর্থা হইয়া বিষম কষ্ট ভোগ করেন, অতএব এই বাল্য বিবাহ নিবারণ করা যে সর্ব্বতোভাবে বিধেয তাহার আর সন্দেহ নাই।

 হে সর্ব্বজন হিতৈী বিদ্যোৎসাহী বন্ধুগণ! তোমরা যত্ন পূর্ব্বক সকল বিষয়ের প্রতিবন্ধক ও বিদ্যা বিষয়ের বিষম কণ্টক স্বরূপ এই বাল্য-বিবাহ রূপ অত্যাচার নষ্ট কর, এই বাল্য-বিবাহ সত্তে স্ত্রী-বিদ্যার উন্নতি সাধনেই বা কি প্রকারে সমর্থ হইবেন এবং কি প্রকারেই বা তদ্বিষয়ে কৃতকার্য্য হইতে পারিবেন। বালিকাগণ ত নবম বা দশম বর্ষ বয়ঃক্রম কালে বিবাহিতা হইয়া একাদশ বা দ্বাদশ বর্ষ বয়ঃপ্রাপ্ত না হইতেই শ্বশুর সদনে গমন পূর্ব্বক সংসার ধর্ম্মে নিযুক্ত হয়, তবে কি প্রকারে তাহাদিগের বিদ্যা ও বুদ্ধির উন্নতি হইবে, দশম বর্ষ পর্য্যন্ত বাল্যাবস্থা থাকে সুতরাং তদবস্থায় তাহাদিগের কোন বিষয়েরই বিশেষ জ্ঞান জন্মায় না, তবে তৎকাল পর্য্যন্ত শিক্ষা করিয়া