পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।

হইয়া এই দুঃসহ যন্ত্রণা হইতে পরিত্রাণ পাইতেন। কিন্তু এক্ষণে সে প্রথা প্রচলিত নাই, সুতরাং আধুনিক বিধবাগণ সেই হৃদয় বিদারক বিষম যন্ত্রণা হইতে মুক্ত হইতে না পারিয়া দিবানিশি অতি প্রদীপ্ত অনলে দগ্ধ হইতে থাকেন। আহা! যে গৃহে এই বৈধব্যরূপ বিষম বিষ প্রবেশ না করিয়াছে, সে গৃহ যে কতদূর শোভনীয় তাহা বলিবার নহে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এই দাবানল সদৃশ বৈধব্যানল প্রায় প্রতি গৃহেই প্রবেশ করিয়াছে, এবং এই দুখানলে পতিত হইয়া অনেকেই দগ্ধ হইতেছে। হয়! কেহ ষোড়শবর্ষীয়া পুত্রবধূকে এই অনলে পতিত দেখিয়া একেবারে ত্রিভুবন শূন্য দেখিতেছেন, কেহ প্রাণসমা ত্রিলোকানুপমা কুমারীকে ঐ হুতাশনে পতিত দৃষ্টে বিষাদ-সাগরে নিমগ্ন হইয়া অতিশয় যন্ত্রণার সহিত জীবন ধারণ করিতেছেন। হায়! সকল দ্রোহেরই শান্তি আছে, কিন্তু এই দ্রোহের আর শান্তি নাই। আহা! পতিবিহীনা নারীগণকে দর্শন করিলে কাহার হৃদয়ে দুঃখোদয় না হয়। হায়! যে কামিনী পূর্ব্বে অতি মনোহর প্রভা ধারণ করিয়া সুহৃদ্‌ বর্গের আনন্দ বর্দ্ধন করিত; পরে তাঁহাকে বৈধব্য দশায় পতিত দেখিয়া সকলে একেবারে অপার দুঃখ পারাবারে নিমগ্ন হয়েন। আহা! কি পরিতাপের বিষয়, নারীগণ বিধবা হইলে একেবারে সর্ব্বত্যাগী হইয়া ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বন করেন, তখন তাঁহাদিগের পূর্ব্বের মত আর প্রভা থাকে না এবং সমাদরও থাকে না। বিধবাগণকে কেহ যত্ন করে না, যেমন অতি পবিত্র কুসুমাধার ভগ্ন হইলে লোকে উহাকে ভস্মাধার করে, হায়! নারীগণ বিধবা হইলে তাহাদিগের দশাও তদ্রুপ হইয়া