পাতা:হেমচন্দ্র.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 হেমচন্দ্র । প্রসন্ন হন, কিন্তু মাদৃশ জনের পক্ষে আপনার প্রসন্নত। ঘন-মেঘাচ্ছন্ন রজনীতে ভয়াকুল পথিকের পক্ষে সৌদামিনীর ক্ষণ-প্রভার ন্যায় আমার ভ্রান্তি ও দুঃখের কারণ হইতেছে—আমার প্রিয়জন-মনস্তাপ-জনিত বৰ্ত্তমান দুঃখরাশির হ্রাস সম্পাদন না ক’রে বরং সমধিক বৃদ্ধি সাধন করিতেছে, এবং আমাকে পরিণাম-চিস্তনে সক্ষম করে আমার হৃদয়কে ব্যাকুল করিতেছে । মাতঃ, এতাবৎকাল আমার বিশ্বাস ছিল যে আপনি প্রসন্ন বলিয়া সৌভাগ্য দেবীও প্রসন্ন হইবেন, হায়! সে বঞ্চিত বিশ্বাস এখন হৃদয় হইতে তিরোহিত স্নইতেছে । আমি এক্ষণে বুঝিতে পারিয়াছি যে সৌভাগ্য দেবীর প্রসন্নতা লাভ করিতে স্বতন্ত্র উপাসনা আবশ্বক, মাতঃ, আমি আপনার চরণে বিদায় লইয়। তাছারি উপাসুনায় প্রৱত্ত হইলাম, আমার দোষ নাই। ( শয্যা হইতে উঠিয়া গৃহের বাহিরে আসিয়া ) হেমচন্দ্র । মা, এত ভোরে ছিমেতে এমন স্থানে ব’সে আছেন ? তারা। (ছল ছল নয়নে ) বাবা, তুমি এক্ষণি যাচ্চ, পাছে সকালে উঠে আর কিছু দেখ ব’লে এই পূর্ণ কুন্তটা রেখেছি—দেখ; আর, (কম্পিত হস্তে ) মীর পায়ের এই অর্ঘ্যটা আমি বিজয়ার দিন গাঙ্গুলিদের বাড়ী থেকে চেয়ে নিয়ে এসেচি ইট হাত পেতে লও, চাদরে বেঁধে রাখ ; তুমি যেখানে থাক ম৷ তোমাকে রক্ষণ করূ’বেনৃ । হেমচন্দ্র। ( অর্ঘ্য লইয়া মাতাকে প্রণাম করিয়৷ মাতার পদধূলি গ্রহণে উদ্যত ) তারা। থাকৃ বাবা থাকৃ আমীর পায়ে কাদা । হেমচন্দ্র। ( চরণমৃত্তিক লইয়া মস্তকে দিয়া) মা আমি এ কাদা মুছব না (সজল নয়নে) মা আমি আজ স্নান করব না। তার। বাবা কলকেতায় গিয়ে একখানি পত্র লিখ; তুমি বিদেশে থাক, আমার প্রাণটী সেখানে পড়ে থাকে—রাত্রিতে একটু কিছু স্বপন দেখলে হু হু ক’রে র্কাদতে থাকি আর মা দুর্গাকে ডাকি, তার পর যতক্ষণ না তোমার চিঠ পাই ততক্ষণ পৰ্য্যন্ত মন শান্ত হয় না ।