$8 সদ্ধর্ম্মীদের প্রতি অত্যাচারের প্রতিশোধার্থ দেবগণের যবনবেশে মর্ত্যে আগমন। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। ধর্ম্ম হৈল যবনরূপী মাথাএত (১) কাল টুপী হাতে শোভে ত্রিরুচ কামান। চাপিয়া উত্তম হয় ত্রিভুবনে লাগে ভয় খোদায় বলিআ এক নাম। নিরঞ্জন নিরাকার (২) হৈলা ভেস্ত অবতার মুখেত বলেত দম্বদার। যতেক দেবতাগণ সভে হয়্যে একমন আনন্দেত পরিল ইজার॥ ব্রহ্ম হৈল মহামদ বিষ্ণু হৈলা পেকম্বর আদম্ফ (৩) হৈল শূলপাণি। গণেশ হইলা গাজী কীর্ত্তিক হইল কাজী ফকীর হইল যত মুনি॥ তেজিআ আপন ভেক(৪) নারদ হইলা শেখ পুরন্দর হইল মল্লনা। চন্দ্র স্বর্য্য আদি দেবে পদাতিক হয়্যা সেবে সভে মিলি বাজায় বাজনা॥ আপুনি চণ্ডিকা দেবী তেহু হৈলা হয় বিবি (৫) পদ্মাবতী হল্য বিবি নূর। যতেক দেবতাগণ হয়্যে সতে একমন প্রবেশ করিল জাজপুর॥ দেউল দেহারা ভাঙ্গে কাড়া (৬) ফিড়া খায় রঙ্গে পাখড় পাখড় বোলে বোল। ধরিয়া ধর্ম্মের পায় রামাই (৭) পণ্ডিত গায় ই বড় বিষম গণ্ডগোল॥ (১) মাথাএত = মাথাতে। (২) নিরাকার প্রভূ অর্থাৎ ইহাদের উপাস্ত শূন্ত-মূর্ত্তি “ভেস্ত” অর্থাৎ স্বর্গে অবতীর্ণ হইলেন। (৩) আদম। (৪) ভেক=বেশ। (৫) হায়া বিবি=ইভ। (৬) কাড়িয়া অর্থাৎ বলপূর্বক গ্রহণ করিয়া। (৭) রামাই পণ্ডিতের পদ্ধতির একখানি প্রাচীন পুথিতে এইরূপ আর একটি বিবরণ পাওয়া যাইতেছে। তাহাও উত্তর কালের যোজনা। উহাতে দৃষ্ট হয় রহমান, মামুদসাহী, ও খোণকার প্রভৃতি নামধেয় মুসলমানগণ জাজপুরের হিন্দু মন্দিরের সন্নিহিত স্বর্ণ ও রৌপ্যের গড় ভাঙ্গিতেছেন। যে স্থানের মন্দিরাদি ইহারা ভগ্ন করেন, তাহ অতঃপর ‘ইহাবকবাদ’ নামে পরিচিত হয় বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে।