Sq8 বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। পঞ্চম পুরুষ যাদবানন্দের পুত্র দ্বিজ বংশীবদন তাহার মনসামঙ্গল রচনা করেন। ইনি বিজয় গুপ্তের সামসময়িক। নানা বিভিন্ন দেশের লেখকগণ যখন মনসা-মঙ্গল রচনা করিয়াছেন, তখন এ কথায় আমাদের আশ্চর্য্যান্বিত হইবার কিছুই নাই যে, কবিরা তাহদের স্বীয় দেশেই মনসামঙ্গলের ক্ষেত্র পরিকল্পনা করিয়া গীতি-বর্ণন-প্রসঙ্গে সেই সেই স্থানের ভৌগোলিক বৃত্তান্ত আখ্যায়িকার সঙ্গে জুড়িয়া দিয়াছেন। পূর্ব্ববর্ত্ত নারায়ণ দেব, বংশীবদন ও বিজয় গুপ্ত প্রভৃতি কবিগণ যেখানে বেহুলার মান্দাস-যাত্রা উপলক্ষে পদ্মানদীর বর্ণনা করিয়াছেন, রাঢ়ের কেতকাদাস, ক্ষেমানন্দ প্রভৃতি কবিগণ সেই স্থলে গাঙ্গুড় নদীকে আশ্রয় করিয়াছেন। পৌরাণিক স্থানসমূহের ভৌগোলিক সংস্থান সম্বন্ধে হিন্দু-লেখকগণ চিরকালই এইরূপ বৃত্তি অবলম্বন করিয়া আসিয়াছেন। যাবাদ্বীপে এখনও কুরুক্ষেত্র, অযোধ্যা প্রভৃতি স্থান আছে; বলীদ্বীপের হিন্দুগণের দৃঢ় বিশ্বাস উক্ত স্থানগুলিই পৌরাণিক আখ্যায়িকাসমূহের প্রকৃত ক্ষেত্র। উড়িষ্যায় ময়ূরভঞ্জের যে অযোধ্যাপুরী আছে, তাহাই রামের জন্মভূমি বলিয়া সেই স্থানের লোকেরা এক সময়ে বিশ্বাস করিতেন। এতৎসম্বন্ধে অপরাপর বিষয় (৩য় সংস্করণ ) বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের ১৯৬ পৃষ্ঠায় দেখুন। মনস-মঙ্গল—খ্রষ্টীয় ১২শ শতাব্দী—কাণা হরিদত্ত। (ইহার বিবরণ ৩য় সংস্করণ বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের ১৮৮ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য। ) পদ্মার সপ-সজ্জা। দুই হাতের শঙ্খ হইল গরল শঙ্কিণী। কেশের জাত কৈল এ কাল নাগিনী॥ সুতলিয়া নাগে কৈল গলার সুতলি। দেবী বিচিত্র নাগে কৈল হৃদয়ে কাচুলী॥ সিতলিয়া নাগে কৈল সীতার সিন্দুর। কাজলিয়া কৈল দেবীর কাজল প্রচুর॥ পদ্মনাগে কৈল দেবীর সুন্দর কিঙ্কিণী। বেতনাগ দিয়া কৈল কাকালি কাচুলী॥ কনক-নাগে কৈলা কর্ণের চাকি বলি। বিঘাতিয়া নাগে দেবীর পায়ের পাগুলি ৷