২৬২ সোণকার নিষেধ। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। কালীনাগ লক্ষীন্ধরকে দংশন করিয়াছে। বেহুলা স্বামীর মৃত দেহের পার্শ্বেকাদিতেছেন। এই অবস্থায় বেহুলার শাশুড়ী সোণকার বাসর-গৃহে প্রবেশ ও বেহুলাকে গালাগালি। প্রাণনাথ কোলে কান্দে বেহুলা নাচনী। ঘরে হৈতে শোনে তাহা সোণকা বাণানী॥ ক্রনন শুনিঞা তার শুকাইল হিয়া। পুত্রবধূ দেখিবারে চলিল ধাইয়া॥ বেহুলা নাচনী কান্দে বড় উচ্চৈঃস্বরে। দুর্লভ লখাই মৈল খট্টার উপরে॥ দেখিয়া বিদরে প্রাণ চক্ষে পড়ে পানী। মরা পুত্র কোলে কর্য। কান্দেন বাণানী॥ পুত্রশোক দিতে বেহুলা এতদিন ছিল। দুৰ্ল্লভ লখাই মোর না জানি কি কৈল॥ হা পুতির (১) পুত্র মোর বাছা লক্ষ্মীন্ধর। তোমা লাগি গড়াইল লোহার বাসর॥ কার শাপ হৈল মোরে কেবা দিল গালি। বংশে কেহ না রহিল দিতে জলাঞ্জলি॥ সোণকা কান্দিয়া দেয় বেহুলারে গালি। সি থার সিন্দূরে তোর না পড়িল কালী॥ পরিধান বস্ত্রে তোর না পড়িল মলি। পাএর আলতায় তোর না পড়িল ধূলি॥ খণ্ড কপালিনী বেহুল চিরনীঞা দাতী। বিভা দিনে মৈল পতি না পোহাইল রাতি॥ মৃত পতি লইয়া বেহুলার কলার মান্দাসে যাত্রা। কলার মান্দাস ভাসে গাঙ্গুড়্যার (২) জলে। বেহুল ভাসিতে যায় প্রভূ লয়্যা কোলে॥ সোণকা কান্দিয়ে বোলে আলো অভাগিনী। এ তিন ভুবনে ইহা কোথাহ না শুনি॥ (১) পুত্রহীনার। (২) গাঙ্গুড় নদীর।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৩৮৪
অবয়ব