পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Qや বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। নরসিংহের ধর্ম্মমঙ্গল। নরসিংহ বস্তুর আদি-পুরুষগণ বসুধাম-নিবাসী ছিলেন। মথুৱা বস্তু বৰ্দ্ধমানের অন্তঃপাতী শাখারীতে বাসস্থাপন করেন। তখন বৰ্দ্ধমানের অধিপতি মহারাজ কীর্ত্তিচন্দ্র। মথুৱা বস্তুর তিন পুত্র,—জ্যেষ্ঠ ঘনশুম, দ্বিতীয় রাধিকা বস্তু এবং কনিষ্ঠ রামকৃষ্ণ। ধর্ম্মমঙ্গল-প্রণেতা নরসিংহ বহু ঘনষ্ঠামের পুত্র। ইহার মাতার নাম নব-মল্লিকা। ইনি অল্প বয়সে পিতৃমাতৃহীন হইয়া পিতামহী কর্তৃক পালিত হন। ইনি শীঘ্রই বাঙ্গল, পারসী, উড়িয়া ও নাগরীতে কৃতবিদ্য হন। ইহাদের গৃহ-অধিষ্ঠাত্রী অষ্টভূজ শঙ্করী অতি জাগ্রত দেবতা ছিলেন। কবি লিখিয়াছেন দেবীর কৃপাবলে ইনি নানা দেশে বিস্তর অর্থ উপার্জন করেন। কর্ম্মোপলক্ষে ইনি বীরভূমির নবাব আসাদুল্লা খায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই নবাব অতি পরাক্রান্ত ছিলেন। কবি লিখিয়াছেন ইহার দুই হাজার উৎকৃষ্ট অশ্বারোহী সৈন্ত এবং বার হাজার ঢালী সর্ব্বদা প্রস্তুত থাকিত, তাহ ছাড়া অসংখ্য তিরন্দাজ ও পদাতিক সৈন্তও ছিল। কবি এই নবাবসরকারে উকীল হন এবং ১৮ বৎসর কাল এই কর্ম্মে নিযুক্ত থাকেন। নবাব আসাদুল্লা খা মুরসিদাবাদ-সরকারে খাজনা দেওয়া বন্ধ করেন; তাহাতে মুরসিদাবাদের নবাব মীরজাফর খাঁ ক্রুদ্ধ হইয় তাহার নিকট দূত প্রেরণ করেন; অনেক বিবেচনার পর মুরসিদাবাদে কর প্রেরণ করাই যুক্তিযুক্ত মনে হইল; এবং ১৭৩৬ খৃষ্টাব্দের ৩০শে কাত্তিকের মধ্যে এক লক্ষ টাকা পাঠাইবেন, আসাদুল্লা খ এই সর্ত্তে আবদ্ধ হইলেন। কবি নরসিংহ জামা-যোড়া ও শিরোপা ভূষিত হইয়া পান্ধী আরোহণ-পূর্বক অনেক লস্কর সমভিব্যাহারে এই একলক্ষ টাকা লইয়া মুরসিদাবাদ অভিমুখে রওনা হইলেন। ঝড়বৃষ্টি-বিতাড়িত হইয়া ইনি আউস গ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেন; সেখানে তাহার যশোদা নামী পিসীর পুত্র নারায়ণ মল্লিক র্তাহাকে বিস্তর আদর ও সম্বৰ্দ্ধনা করেন। ঐ স্থানের সন্নিকটে খেস্থরতলায় ধর্ম্মপূজা হইতেছিল। সেই খানে কবি উৎসব দেখিতে গমন করেন। তথায় এক অপূর্ব্ব সন্ন্যাসী তাহাকে ধর্ম্মের সঙ্গীত রচনার আদেশ দিয় অদৃপ্ত হন। দুই দিন পরে কবি মুরসিদাবাদে উপস্থিত হন এবং দরবারের কার্য্য সুনির্ব্বাহ করিয়া কর্ম্মস্থলে প্রত্যাবর্ত্তন করেন। ধর্ম্ম-সঙ্গীত রচনার যে প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তাহা প্রকাশ করাতে তদীয় বন্ধু খেলারাম আচার্য্য, হরি সোম এবং শস্তু বস্থ তাহাকে বিশেষ উৎসাহ প্রদান করেন। এই ভাবে ১৬৫৯ শকের (১৭৩৭ খৃঃ) ১০ই শ্রাবণ ধর্ম্মমঙ্গলের রচনা আরব্ধ হয়। এই ধর্ম্ম-মঙ্গলখানি বৃহৎ গ্রন্থ। ইহা ঘনরামের