প্রাকৃতিকী/অদৃশ্য কিরণ
অদৃশ্য কিরণ
জ্বলন্ত কঠিন ও তরল পদার্থজাত বর্ণচ্ছত্র প্রায়ই অবিচ্ছিন্ন হইতে দেয়া যায়; সৌরবর্ণচ্ছত্রের কৃষ্ণরেখা বা বাষ্পীয় বর্ণচ্ছত্রের স্থূলোজ্জ্বল রেখা ইহাতে থাকে না।[১] এই অবিচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্রে লোহিত হইতে ভায়লেট্ পর্য্যন্ত সকল বর্ণেরই পূর্ণ বিকাশ প্রত্যক্ষ হয়;—কিন্তু এই সুবিন্যস্ত প্রশস্ত বর্ণচ্ছত্রেও আমরা সকল বর্ণ দেখিতে পাই না। জ্বলন্ত পদার্থজাত আলোক-তরঙ্গ দ্বারা যে সকল বর্ণ উৎপন্ন হয়, মানবচক্ষু তাহার সকলগুলি দেখিতে পায় না,—অনম্ভ আকাশব্যাপী অনন্ত-তরঙ্গের প্রত্যেক প্রকার হিল্লোল লক্ষ্য করা, সসীম মানব দৃষ্টির সম্পূর্ণ অসাধ্য ব্যাপার; তাই আমরা অনতিবিস্তৃত সাধারণ বর্ণচ্ছত্রে কেবল লোহিত হইতে ভায়লেট্ পর্য্যন্ত কয়েকটি বর্ণ দেখিয়া থাকি। লোহিত বর্ণোৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা বৃহত্তর তরঙ্গ দ্বারা যে বর্ণ উৎপন্ন হয়, তাহা ক্ষুদ্রদৃষ্টি মানব কিছুতেই দেখিতে পায় না, এবং ভায়লেট্ উৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা সূক্ষ্মতর কম্পন দ্বারা যে সকল বর্ণ বিকশিত হয়, তাহাও মানব-ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য হয় না। মানব-ইন্দ্রিয়াদির হীনতার ইহাই একমাত্র উদাহরণ নয়,—চক্ষুর ন্যায় আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয়েরও শক্তির একটা সীমা আছে। পাঠকপাঠিকাগণ বোধ হয় জানেন, বায়ুরাশি কোন প্রকারে আন্দোলিত হইয়া কম্পিত হইলে শব্দ উৎপন্ন হইয়া থাকে। এই কম্পন সংখ্যা যত অধিক হইবে, শব্দও তত চড়িতে থাকিবে। পরীক্ষা দ্বারা দেখা গিয়াছে, এই কম্পনসংখ্যা সেকেণ্ডে ৩৮০০০ বার হইলে, শব্দ এতই চড়িয়া যায় যে, তাহা তখন আমাদের কর্ণ দ্বারা অনুভূত হয় না। আবার কম্পনসংখ্যা কমাইতে কমাইতে সেকেণ্ডে ৩০ বারের কম হইলে, শব্দ এতই গম্ভীর হইয়া পড়ে যে, তাহা আর কোনক্রমেই শ্রুতিগোচর হয় না। পরীক্ষা করিলে ইন্দ্রিয়াদির অসম্পূর্ণতা আমরা প্রতিপদক্ষেপেই দেখিতে পাই,—তাই দর্শনকার্য্যে চক্ষুর অপকর্ষতা লক্ষ্য করিয়া জনৈক খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক বলিয়াছিলেন,—“মানব-চক্ষুর ন্যায় একটা অসম্পূর্ণ স্থূল যন্ত্র নির্ম্মিত হইয়া বিক্রয়ার্থ প্রস্তুত থাকিলে, তাহা চিরকালই অবিক্রীত থাকিত।”
পূর্ব্বোল্লিখিত অতীন্দ্রিয় কিরণের অস্তিত্ব ও তাহার প্রকৃতি অল্পদিনই হইল আবিষ্কৃত হইয়াছে,—একশত বৎসর পূর্ব্বে অদৃশ্য-কিরণের কথা কেহই জানিতেন না। গত ১৮০০ খৃঃ অব্দে উইলিয়ম্ হার্সেল, তাপমান যন্ত্র দ্বারা বর্ণচ্ছত্রস্থ বিবিধ আলোকের তাপ নির্দ্ধারণকালে, ইহার লোহিতাংশের ঠিক্ অব্যবহিত পূর্ব্বে সর্ব্বাপেক্ষা অধিক তাপের চিহ্ন দেখিয়া, ইহা নিশ্চয়ই বর্ণচ্ছত্রস্থ কোন অদৃশ্য আলোকরশ্মি দ্বারা উৎপন্ন হইতেছে বলিয়া সিদ্ধান্ত করেন। হার্সেলের এই আবিষ্কারের এক বৎসর পরে, আলোক দ্বারা নানা রাসায়নিক পদার্থ কি প্রকারে বিকৃতিপ্রাপ্ত হয় তাহার পরীক্ষাকালে, রিটার্ নামক জনৈক বিজ্ঞানবিৎ বর্ণচ্ছত্রের সকল বর্ণ অপেক্ষা ভায়লেটেরই রাসায়নিক শক্তি অতীব প্রবল বলিয়া স্থির করেন এবং ভায়লেটের পরবর্ত্তী আলোকহীন স্থানে, এই শক্তি আরো অধিক প্রত্যক্ষ করেন। কি প্রকারে বর্ণচ্ছত্রবহির্ভূত আলোকহীন স্থানে, এই অত্যাশ্চর্য্য রাসায়নিক শক্তি আসিল, অনেকদিন অবধি তাহা কেহই স্থির করিতে পারেন নাই। ইহার কিছুদিন পরে তাৎকালিক পণ্ডিতমণ্ডলীর অনেক চিন্তা ও অনুসন্ধানের ফলে, ইহা নিশ্চয়ই ভায়লেটৃ বর্ণোৎপাদক আলোকতরঙ্গ অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর তরঙ্গজাত কোন এক আলোকশক্তির প্রভাবে ঘটিতেছে বলিয়া স্থিরীকৃত হয়। সাধারণ দৃশ্য বর্ণচ্ছত্রে, লোহিত ও ভায়লেট্ প্রান্তের পরেও, যে আরো কতকগুলি অদৃশ্য-বর্ণের বিকাশ হয়, তাহা পুর্ব্বোক্ত প্রকারে, হার্সেল ও রিটারের মৌলিক গবেষণায় বেশ প্রমাণিত হইয়াছিল।
এই আবিষ্কারের পর, সুপ্রসিদ্ধ বিজ্ঞানবিৎ ওলাইন্ বর্ণচ্ছত্রের এই অদৃশ্যাংশের প্রকৃতি বিষয়ে নানা পরীক্ষাদি করিয়া, পূর্ব্বোক্ত আবিষ্কারকদ্বয়ের সিদ্ধান্তের সত্যতা প্রতিপাদন করিয়াছিলেন,— এতদ্ব্যতীত তাঁহার পরীক্ষাফলে বর্ণচ্ছত্র সম্বন্ধে অনেক নূতন তত্ত্বও প্রকাশিত হইয়াছিল। রশ্মিপুঞ্জের আলোকপথ পরিবর্ত্তন ক্ষমতা (Refrangibility) ও রাসায়নিক শক্তি, বর্ণচ্ছত্রের লোহিত প্রান্তে সর্ব্বাপেক্ষা অল্প হইয়া ক্রমে বৃদ্ধি হইতে হইতে ভায়লেট্ প্রান্তেই যে অত্যন্ত অধিক হইয়া পড়ে, তাহা ওলাষ্টনই সর্ব্বপ্রথম আবিষ্কার করেন, এবং তাপের মাত্রা ঠিক্ বিপরীত ভাবে ভায়লেট হইতে বৃদ্ধি পাইয়া যে, লোহিতেই সর্ব্বাপেক্ষা প্রবল হইয়া দাঁড়ায়, তাহাও ইনি সর্ব্বপ্রথম প্রচার করেন।
১৮৩৯ অব্দ হইতে কয়েক বৎসর সার্ জন হার্সেল অদৃশ্য কিরণ সম্বন্ধে নানা পরীক্ষায় নিযুক্ত ছিলেন এবং ফোটোগ্রাফের কাচের (Sensitive Plate) উপর এই আলোকের প্রভাব সম্বন্ধে নানা আবিষ্কার করিয়াছিলেন। এই সময়ে, ডাক্তার ড্রেপার নামক জনৈক মার্কিন বৈজ্ঞানিকও উক্ত বিষয়ে পরীক্ষায় নিযুক্ত ছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ তিনি বিশেষ কোন নূতন তত্ত্বাবিষ্কারে কৃতকার্য্য হন নাই,— বর্ণচ্ছত্রের কয়েক খানি ফোটো তুলিয়াই পরীক্ষায় নিরস্ত হইয়াছিলেন।
বর্ণচ্ছত্র-সম্বন্ধে,—বিশেষ ইহার অদৃশ্য কিরণ বিষয়ে, আজ কাল আমরা যে সকল নূতন কথা জানিয়াছি, তাহার অধিকাংশই ফোটোগ্রাফি সাহায্যে প্রকাশিত হইয়াছে। আলোক বিজ্ঞানে ফোটোগ্রাফির কার্য্য অশেষ, বিশেষতঃ রশ্মিনির্ব্বাচনকার্য্যে ইহার ন্যায় কার্য্যোপযোগী উপায় দুষ্প্রাপ্য। ফোটোগ্রাফের কাচের পূর্ব্বোক্ত বর্ণচ্ছত্র অঙ্কনশক্তি আবিষ্কৃত হওয়ার পরও, সর্ব্বাঙ্গসুন্দর বর্ণচ্ছত্র উৎপাদনের সহজ উপায় পরিজ্ঞাত না থাকায়; অনেক দিন অবধি অদৃশ্য কিরণ সম্বন্ধে কোন আবিষ্কারের কথা শুনা যায় নাই। ১৮৫২ অব্দে নান। পদার্থের রশ্মিহরণ শক্তি (Power of Absorption) পরীক্ষাকালে, অধ্যাপক ষ্টোক্স্ (Stokes) অদৃশ্যালোক নির্ব্বাচনে কোয়ার্টজ্ নামক বালুকা প্রস্তরের (Quartz) উপযোগিতা আবিষ্কার করেন। সাধারণ কাচের পরকলায় (Lens) মধ্য দিয়া আলোক আনিলে অধিকাংশ অদৃশ্যালোকরশ্মিই, কাচ দ্বারা হৃত হয়, কাজেই সেই আলোকজাত বর্ণচ্ছত্রে অদৃশ্যকিরণের পরিমাণ অতি অল্পই থাকে,—কিন্তু উক্ত প্রস্তর নির্ম্মিত পরকলার সাহায্যে বর্ণচ্ছত্র পাতিত করিলে, ইহার মধ্য দিয়া সকল বর্ণরশ্মিই অক্ষত ও অলুপ্তভাবে বহির্গত হইয়া সর্ব্বাঙ্গসুন্দর পূর্ণ বর্ণচ্ছত্র বিকাশ করে। ষ্টোক্স্ সাহেব আলোক পরীক্ষার এই সুযোগ পাইয়া পূর্ব্বোক্ত বালুকা প্রস্তর সাহায্যে অল্পায়াসেই ঈপ্সিত বর্ণচ্ছত্র রচনা করিয়াছিলেন এবং ফোটোগ্রাফির দ্বারা ইহার অনেকগুলি ছবি তুলিয়া রাখিয়াছিলেন। ষ্টোক্স্ সাহেবের এই পরীক্ষা দ্বারা অদৃশ্যালোকরশ্মি সম্বন্ধে নানা রহস্য প্রকাশিত হইয়াছিল। ইনি বৈদ্যুতিক বর্ণচ্ছত্রের যে ছবি তুলিয়াছিলেন, তাহাতে অদৃশ্যালোকরশ্মি এত অধিক ছিল যে, কেবল তাহারই বর্ণচ্ছত্র, দৈর্ঘ্যে দৃশ্যমান সাধারণ বর্ণচ্ছত্রের প্রায় সাত গুণ হইতে দেখা গিয়াছিল।
এই অদৃশ্যালোকের প্রকৃত বর্ণ কি, তাহা আমাদের জ্ঞানাতীত। অসম্পুর্ণ মানবদৃষ্টি উক্ত আলোক-উৎপাদক কম্পন কোনক্রমেই অনুভব করিতে পারে না। ভায়লেটের অপর পার্শ্বস্থ অদৃৎ-কিরণের রাসায়নিক শক্তি অত্যন্ত প্রবল এবং এই শক্তিই আলোকের একমাত্র অস্তিত্বজ্ঞাপক। ফোটোগ্রাফের কাচ, এই আলোকে উন্মুক্ত রাখিলে তৎক্ষণাৎ বিকৃতাবস্থা প্রাপ্ত হয়; কাচের এই বিকৃতি দেখিয়া আমরা অদৃশ্যালোকের অস্তিত্ব জানিতে পারি।
আজকাল যে প্রণালীতে ফোটোগ্রাফের ছবি তোলা হইয়া থাকে, পূর্ব্ব-বর্ণিত অদৃশ্যালোকই তাহার মূল অবলম্বন। লেন্স্ দ্বারা ক্যামেরার মধ্যস্থ কাচের পর্দায় ছায়ালোকময় যে ছবি হয়, তাহার আলোকাংশে দৃশ্যমান আলোকের সহিত অদৃশ্যালোকই মিশ্রিত থাকে। এই শেষোক্ত আলোক, ইহার স্বাভাবিক রাসায়নিকশক্তি প্রভাবে, পর্দাসংলগ্ন ফোটোগ্রাফিক্ কাচ বিকৃত করিয়া ফেলে, কিন্তু কাচের ছায়াহীন অংশটি আলোকাভাবে পূর্ব্বাবস্থাতেই থাকিয়া যায়। ইহার পর, অপর প্রক্রিয়াদ্বারা উক্ত কাচের অবিকৃত অংশটি, বিকৃত আলোকাস্পৃষ্ট অংশ হইতে স্পষ্টতঃ পৃথক করিলে ছবি ফুটাইয়া তোলা হইয়া থাকে।
এই ত গেল ভায়লেটের পরবর্ত্তী অদৃশ্য-কিরণের কথা। বর্ণচ্ছত্রের লোহিতপ্রান্তস্থ অদৃশ্য কিরণের প্রকৃতি, আবার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এই অদৃশ্যরশ্মির অস্তিত্ব কেবল তাপ দ্বারা আবিষ্কৃত হইয়াছিল,—কাজেই তাপ পরীক্ষাই এই রশ্মিজাত বর্ণচ্ছত্রের বিস্তৃতি প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দ্ধারণের একমাত্র উপায়; কিন্তু এই বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষার উপযোগী অতি সূক্ষ্ম তাপমান যন্ত্র এ পর্য্যন্ত নির্ম্মিত না হওয়ায়, ইহার প্রকৃত রহস্য চিরান্ধকারাচ্ছন্ন রহিয়া গিয়াছে। পূর্ব্ববর্ণিত অদৃশ্য কিরণের ন্যায় ইহাতে রাসায়নিক শক্তির চিহ্নমাত্র দেখা যায় না, এজন্য ইহার প্রকৃতি স্থিরীকরণকার্য্যে ফোটোগ্রাফের কাচের ন্যায় কোন রাসায়নিক পদার্থও বিশেষ উপযোগী হইতেছে না। এই অদৃশ্যালোকের প্রকৃতি নির্দ্ধারণব্যাপারে, এই প্রকার নানা গোলযোগ থাকায় অনেক দিন অবধি বৈজ্ঞানিকগণের মধ্যে কেহই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করিতে সাহসী হন নাই। সুপ্রসিদ্ধ বিজ্ঞানবিৎ টিঙালা ও মেলোনি কিছুকাল ইহার পরীক্ষায় নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু এই পণ্ডিতদ্বয়ের ঐকান্তিক চেষ্টাতেও অদৃশ্যালোক সম্বন্ধে, বিশেষ নূতন তত্ত্ব কিছুই প্রকাশ পায় নাই। তবে মেলোনি-আবিষ্কৃত বৈদ্যুতিক তাপমান যন্ত্র (Thermo Electric Pile) অত্যল্প তাপ পরিমাপ কার্য্যে বিশেষ উপযোগী বলিয়া অদৃশ্যবর্ণচ্ছত্রের বিস্তৃতি সম্বন্ধে প্রাচীন বৈজ্ঞানিকগণ যে সকল অনুমান করিয়াছিলেন তাহা যে সম্পূর্ণ ভিত্তিশূন্য ইহা বেশ দেখা যাইতেছে এবং এই বর্ণচ্ছত্রের দৈর্ঘ্য যে, অনুমিত দৈর্ঘ্য অপেক্ষা অনেক অধিক তাহাও বেশ সপ্রমাণ হইয়াছে। অধ্যাপক ল্যাংলের বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষার সময়ে একটা কথা উঠিয়াছিল যে, কাপ্তেন আবনি (Aboney) নামক জনৈক বিজ্ঞানবিৎ পূর্ব্ববর্ণিত ফোটোগ্রাফিক্ কাচের ন্যায়, একটা রাসায়নিক পদার্থ প্রস্তুত করিয়াছেন; ইহা বর্ণচ্ছত্রের লোহিত প্রান্তস্থ অদৃশ্যালোকে কিছুকাল উন্মুক্ত রাখিলে বিকৃত হইয়া যায়।
যাহা হউক, লোহিত প্রান্তস্থ অদৃশ্যালোক সম্বন্ধে এখনও অনেক জ্ঞাতব্য বিষয় তামসাচ্ছন্ন রহিয়াছে, এ সকলের আবিষ্কার যে, ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানবিদ্গণের কালব্যাপী ধীর অনুসন্ধানসাক্ষেপ তাহাতে আর অণুমাত্র সন্দেহ নাই।
- ↑ বর্ণচ্ছত্রের বিশেষ বিবরণ “বর্ণচ্ছত্র” ও “বিশ্লেষণ প্রথা” প্রবন্ধ দ্বয়ে দ্রষ্টব্য।