পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
ট্যাগ: মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{ফাঁক}}আমি ভূলিলাম। বাড়ীওয়ালী আমার জন্য ঘর দেখিতে লাগিল, কালীদাসী সেই বাড়ীতেই ঘর নিল। আমহার্ষ্ট ষ্ট্রীটের উপরে যেখানে এখন সিটিকলেজের বাড়ী তৈয়ারী হইয়াছে, তাহার নিকটে এক বস্তীতে আমি ও রাজবালা দুইখানি খোলার ঘর ভাড়া লইলাম। রাণী বাড়ীওয়ালী আমাদের দুই-জনকেই কিছু টাকা ধার দিয়া জিনিষপত্র ও কাপড়-চোপড় সমস্ত জোগার করিয়া দিল।
{{ফাঁক}}আমি ভূলিলাম। বাড়ীওয়ালী আমার জন্য ঘর দেখিতে লাগিল, কালীদাসী সেই বাড়ীতেই ঘর নিল। আমহার্ষ্ট ষ্ট্রীটের উপরে যেখানে এখন সিটিকলেজের বাড়ী তৈয়ারী হইয়াছে, তাহার নিকটে এক বস্তীতে আমি ও রাজবালা দুইখানি খোলার ঘর ভাড়া লইলাম। রাণী বাড়ীওয়ালী আমাদের দুই-জনকেই কিছু টাকা ধার দিয়া জিনিষপত্র ও কাপড়-চোপড় সমস্ত জোগার করিয়া দিল।


{{ফাঁক}}কুসঙ্গে কিরূপ অধঃপতন হয়, আর এক দিক দিয়া তাহা দেখিতে পাইলাম। আমার স্কুলে পড়া বিদ্যা সমস্ত ভুলিয়া যাইবার গতিক হইল। মুকুলদার কাছে কত নূতন বিষয় শিখিয়াছিলাম—সাহিত্য, ইতিহাস প্রভৃতি এখন সব চাপা
{{ফাঁক}}কুসঙ্গে কিরূপ অধঃপতন হয়, আর এক দিক দিয়া তাহা দেখিতে পাইলাম। আমার স্কুলে পড়া বিদ্যা সমস্ত ভুলিয়া যাইবার গতিক হইল। মুকুলদার কাছে কত নূতন বিষয় শিখিয়াছিলাম—সাহিত্য, ইতিহাস প্রভৃতি এখন সব চাপা পড়িয়া গেল। আমি যাহাদের সঙ্গে ছিলাম তাহারা কেহ লেখাপড়ার চর্চ্চা করিত না। কেবল কা'র কয়টা লোক জুটিয়াছে—কার প্রণয়ীর সঙ্গে কি আলাপ হইল—আর যত সব অশ্লীল ব্যাপার, ইহাই ছিল প্রধান আলোচনার বিষয়। তারপর নিজেদের রান্না ও ঘরের কাজ সমস্ত করিতে হইত। আমরা লজ্জায় বাজারে যাইতাম না। অন্য কাহাকেও দিয়া বাজার করাইতাম।
পড়িয়া গেল। আমি যাহাদের সঙ্গে ছিলাম তাহারা কেহ লেখাপড়ার চর্চ্চা করিত না। কেবল কা'র কয়টা লোক জুটিয়াছে—কার প্রণয়ীর সঙ্গে কি আলাপ হইল—আর যত
সব অশ্লীল ব্যাপার, ইহাই ছিল প্রধান আলোচনার বিষয়। তারপর নিজেদের রান্না ও ঘরের কাজ সমস্ত করিতে হইত। আমরা লজ্জায় বাজারে যাইতাম না। অন্য কাহাকেও দিয়া বাজার করাইতাম।


{{ফাঁক}}লম্পট প্রণয়ীকে পতিতা সমাজে 'বাবু' বলা হয়। এখন হইতে আমি এই শব্দটী মাঝে মাঝে ব্যবহার করিব। এই
{{ফাঁক}}লম্পট প্রণয়ীকে পতিতা সমাজে 'বাবু' বলা হয়। এখন হইতে আমি এই শব্দটী মাঝে মাঝে ব্যবহার করিব। এই 'বাবু' লইয়া খুব গোলযোগ হইত। কোন পতিতার প্রণয়ী অন্য নারীর ঘরে প্রবেশ করিলে তাহা লইয়া তুমুল ঝগড়া বিবাদ বাঁধিয়া উঠিত। সকলেই তাহাতে যোগ দিত। আমিও বাদ যাইতাম না। আর যত রকমের অশ্লীল অশ্রাব্য কথা শুনিতে
'বাবু' লইয়া খুব গোলযোগ হইত। কোন পতিতার প্রণয়ী অন্য নারীর ঘরে প্রবেশ করিলে তাহা লইয়া তুমুল ঝগড়া বিবাদ
বাঁধিয়া উঠিত। সকলেই তাহাতে যোগ দিত। আমিও বাদ যাইতাম না। আর যত রকমের অশ্লীল অশ্রাব্য কথা শুনিতে

১০:১১, ৯ আগস্ট ২০২২ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

 আমি ভূলিলাম। বাড়ীওয়ালী আমার জন্য ঘর দেখিতে লাগিল, কালীদাসী সেই বাড়ীতেই ঘর নিল। আমহার্ষ্ট ষ্ট্রীটের উপরে যেখানে এখন সিটিকলেজের বাড়ী তৈয়ারী হইয়াছে, তাহার নিকটে এক বস্তীতে আমি ও রাজবালা দুইখানি খোলার ঘর ভাড়া লইলাম। রাণী বাড়ীওয়ালী আমাদের দুই-জনকেই কিছু টাকা ধার দিয়া জিনিষপত্র ও কাপড়-চোপড় সমস্ত জোগার করিয়া দিল।

 কুসঙ্গে কিরূপ অধঃপতন হয়, আর এক দিক দিয়া তাহা দেখিতে পাইলাম। আমার স্কুলে পড়া বিদ্যা সমস্ত ভুলিয়া যাইবার গতিক হইল। মুকুলদার কাছে কত নূতন বিষয় শিখিয়াছিলাম—সাহিত্য, ইতিহাস প্রভৃতি এখন সব চাপা পড়িয়া গেল। আমি যাহাদের সঙ্গে ছিলাম তাহারা কেহ লেখাপড়ার চর্চ্চা করিত না। কেবল কা'র কয়টা লোক জুটিয়াছে—কার প্রণয়ীর সঙ্গে কি আলাপ হইল—আর যত সব অশ্লীল ব্যাপার, ইহাই ছিল প্রধান আলোচনার বিষয়। তারপর নিজেদের রান্না ও ঘরের কাজ সমস্ত করিতে হইত। আমরা লজ্জায় বাজারে যাইতাম না। অন্য কাহাকেও দিয়া বাজার করাইতাম।

 লম্পট প্রণয়ীকে পতিতা সমাজে 'বাবু' বলা হয়। এখন হইতে আমি এই শব্দটী মাঝে মাঝে ব্যবহার করিব। এই 'বাবু' লইয়া খুব গোলযোগ হইত। কোন পতিতার প্রণয়ী অন্য নারীর ঘরে প্রবেশ করিলে তাহা লইয়া তুমুল ঝগড়া বিবাদ বাঁধিয়া উঠিত। সকলেই তাহাতে যোগ দিত। আমিও বাদ যাইতাম না। আর যত রকমের অশ্লীল অশ্রাব্য কথা শুনিতে