মহুয়া/নাম্নী/নাগরী

উইকিসংকলন থেকে

নাগরী

ব্যঙ্গ-সুনিপুণা,
শ্লেষবাণ-সন্ধান-দারুণা!
অনুগ্রহ-বর্ষণের মাঝে
বিদ্রুপ-বিদ্যুৎঘাত অকস্মাৎ মর্ম্মে এসে বাজে।
সে যেন তুফান
যাহারে চঞ্চল করে সে তরীকে করে খান্‌খান্
অট্টহাস্য আঘাতিয়া এপাশে ওপাশে
প্রশ্রয়ের বীথিকায় ঘাসে ঘাসে
রেখেছে সে কণ্টক-অঙ্কুর বুনে বুনে;
অদৃশ্য আগুনে
কুঞ্জ তা’র বেড়িয়াছে;
যারা আসে কাছে
সব থেকে তা’রা দূরে রয়;
মোহমন্ত্রে যে-হৃদয়
করে জয়
তারি ’পরে অবজ্ঞায় দারুণ নির্দ্দয়।

আপন তপস্যা ল’য়ে যে-পুরুষ নিশ্চল সদাই,
যে উহারে ফিরে চাহে নাই,
জানি সেই উদাসীন
একদিন
জিনিয়াছে ওরে,
জ্বালাময়ী তারি পায়ে দীপ্ত দীপ দিল অর্ঘ্য ভ’রে!


বিদুষী নিয়েছে বিদ্যা শুধু চিত্তে নয়,
আপন রূপের সাথে ছন্দ তা’রে দিল অঙ্গময়;
বুদ্ধি তা’র ললাটিকা,
চক্ষুর তারায় বুদ্ধি জ্বলে দীপশিখা;
বিদ্যা দিয়ে রচে নাই পণ্ডিতের স্থূল অহঙ্কার,
বিদ্যারে ক’রেছে অলঙ্কার।
প্রসাধন-সাধনে চতুরা,
জানে সে ঢালিতে সুরা
ভূষণ ভঙ্গীতে,
অলক্তের আরক্ত ইঙ্গিতে।

জাদুকরী বচনে চলনে;
গোপন সে নাহি করে আপন ছলনে;
অকপট মিথ্যারে সে নানা রসে করিয়া মধুর
নিন্দা তা’র করি’ দেয় দূর;
জ্যোৎস্নার মতন
গোপনেও নহে সে গোপন।
আঁধার আলোরি কোলে র’য়েছে জাগরি’—
—নাম কি নাগরী?