পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেগুলো কাক-মশায়ের কাছে নিয়ে উপস্থিত হয়। কাকমশায় দেখেন, কোন মা কী রকম ছেলে-মেয়ে চান, আর তিনি পাখিদের বাসা থেকে কখনো কাকের ছা কখনো বকের ছা নিয়ে তাদের কাছে মানুষ করতে পাঠিয়ে দেন। সব মা লেখেন আমার পয়লা নম্বর ছেলে চাই । কাকমশায় এক-এক সময় বিরক্ত হয়ে যে পাখি সামনে পান তাকেই মানুষ হতে পাঠিয়ে দেন । উপরো-উপরি মেয়ে পেয়ে যে মা মিনতি করে লেখেন, ‘কাকমশায়, এইবার অনুগ্রহ করে যদি একটি ছেলে পাঠান তো চিরবাধিত থাকব । আপনার স্নেহের তমুক। তবে কাকমশায়ের যদি মেজাজ খুশি থাকে সেদিন তবে নিশ্চয়ই তিনি আর এক মেয়ে পাঠাবেন, জানা কথা । আবার হয়তো যেদিন চটে আছেন, সেদিন কেউ চাইলে, সাত ছেলের পরে একটি মেয়ে, সাত ভাই চম্পার এক বোন পারুল, কাকমশায় তাকে অষ্টম গর্ভের আর এক ছেলে পাঠিয়ে বসলেন। এমনি প্রায়ই ঘটে । তাই দরখাস্ত লেখবার সময় পরিষ্কার করে কী চাই লেখা আর ঠিক ঠিকানা দেওয়া প্রয়োজন। কত যে ছেলে-মেয়ে ঠিকানা ভুল হওয়াতে এ-বাড়িতে যেতে ও-বাড়িতে গিয়ে পড়ে, তার ঠিকানা নেই। বড়োমানুষ তার অনেক মেয়ে হলেও বিয়ে দেবার ভাবনা নেই, কিন্তু সে চায় পয়সা ওড়াতে পারে এমন একটি ছেলে ; আর গরিব চাচ্ছে একটিও মেয়ে নয়, রোজগারি এক ছেলে। কিন্তু ঠিকানা বদল হয়ে গরিব পেলে এক বাক মেয়ে আর বড়োমানুষটা কিছুই পেলে না ; পুস্তিপুত্তর নেবার জোগাড় করতে লাগল। এমনি পণ্ডিতের ঘরে যাচ্ছে চাষা ছেলে, চাষার ঘরে যাচ্ছে পণ্ডিত । সব গোলমাল হচ্ছে, কাকমশায় যতই বুড়ো হচ্ছেন। নন্দনকাননের নোটের নৌকোটা যখন কাকের হাতে পড়ল, তখন তিনি সেটা পড়ে কিছুই বুঝতে পারলেন না। কাকের দপ্তরখানার খাতাঞ্চি দেওয়ান কারকুন কাক বক সবাই এসে, একবার সোজা পায়ে একবার উল্টো পায় ধরে উণ্টে-পাণ্টে পড়ে ঠিক করলে, বোধহয় কে একেবারে পাঁচটি খোকা চায়, কেন না S 88