পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩০২
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩০২

________________

৩০২ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) | এই কথাগুলাে মেনে নিতে পারছেন না? একটা ইস্পাতের পাত নিয়ে পরীক্ষা শুরু করলেই তাে পারেন। মনে রূপান্তরিত হয়েছে কি না কি করে বুঝবেন? কেন, ই. ই. জি মেশিনের সাহায্যে। | পরীক্ষায় ইস্পাতের পাতটি আলােকময় হচ্ছে না? অদৃশ্য হচ্ছে না? উলটো-পালটা বিজ্ঞানীবিরােধী আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছি বলছেন? আমাকে এই জন্য ধিক্কার দেবেন না কি? একটু থামুন। শুনুন এমন একটা তথ্যের বা তত্ত্বের জন্য প্রশংসা বা নিন্দা কোনও কিছুই আমার প্রাপ্য নয়, প্রাপ্য বিবেকানন্দের। বিবেকানন্দ রচনা সমগ্রর উল্লিখিত বইটির ২৬৪ পৃষ্ঠায় বিবেকানন্দের বক্তব্য হিসেবেই এমন সব উদ্ভট কথা লেখা রয়েছে। আত্মা নিয়ে আরও কিছু বিশিষ্ট ভাববাদীর মত ১৯৮৬ সালে ‘উদ্বোধন কার্যালয় একটি বই প্রকাশ করে-মন ও তার নিয়ন্ত্রণ। লেখক-স্বামী বুধানন্দ, অনুবাদক স্বামী ঈশাত্মনন্দ। বইটিতে বেদান্ত মতে মন কী সে বিষয়ে কিছু আলােচনা রয়েছে। ১৩ পৃষ্ঠা রয়েছে, “মনের পিছনেই থাকে আত্মা, যা মানুষের যথার্থ স্বরূপ। শরীর এবং মন দুই জড়, আত্মাই অচতন্যস্বরূপ।” | স্বামী বুধানন্দের শরীর-বিজ্ঞান সম্বন্ধে অজ্ঞতারই ফলশ্রুতি এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক অন্ধ বিশ্বাসজড়িত বক্তব্য। মন’ যে জড় বস্তু নয় এবং মন ও চৈতন্য যে কোন পৃথক কিছু নয়, এ বিষয়ে নতুন করে আর আলােচনায় গেলাম না, কারণ আগেই এ নিয়ে বিজ্ঞান কী বলে, আলোচনা করেছি। এবার যে বইটি নিয়ে আলােচনা করব, তার নাম ‘সত্য দর্শন’, প্রকাশক বারাণসীর কলিকানন্দ বেদান্ত আশ্রম’। লেখক পরমহংস পরিব্রাজকচার্য শ্রীমৎ কালিকানন্দ স্বামী ১০৯ পৃষ্ঠায় মনস্তত্ত্ব” শিরােনামের আলােচনায় বলেছেন, “তােমরা যে চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক এই পঞ্চেন্দ্রিয় যােগে জগৎকে প্রত্যক্ষ কর, বাস্তবপক্ষে কিন্তু কেবল শরীরের এই বহিস্থ পঞ্চেন্দ্রিয়ের দ্বারাই তােমাদের বহির্জগৎ প্রত্যক্ষ করার কার্য শেষ হয় না। এই বাহিরের পঞ্চেন্দ্রিয় ইন্দ্রিয় নহে, উহা কেবল বাহিরের বিষয়কে ভিতরে লইয়া যাইবার যন্ত্রবিশেষ মাত্র; প্রকৃত ইন্দ্রিয় মস্তিষ্কস্থ স্নায়ুকেন্দ্রেই বিদ্যমান। মনে কর, আমি একটি শব্দ শুনিতেছি; এখানে বাহিরের কর্ণ শব্দটিকে গ্রহণ করিয়া মস্তিষ্কই ইন্দ্রিয়ে পৌছাইল, তৎপর এই ইন্দ্রিয় উহা বহন করিয়া লইয়া গিয়ে বুদ্ধির নিকট পৌছাইল। এই মনও কেবল বাহক মাত্র, মন ঐ শব্দকে আরও ভিতরে বহন করিয়া লইয়া গিয়া বুদ্ধির নিকট পৌছাইল। তখন বুদ্ধি উহার সম্বন্ধে নিশ্চয় করে যে, উহা কিসের শব্দ এবং উহা ভাল কি মন্দ। এই বুদ্ধির আবার আরও ভিতরে লইয়া গিয়া সর্বসাক্ষীস্বরূপ, সকলের প্রভু আত্মার নিকট উহাকে সমর্পণ করিল। তখন পুনরায় যে যে ক্রমে উহা ভিতরে গিয়াছিল, সেই সেই ক্রমে আবার বহির্যন্ত্রে আসিল,—প্রথম বুদ্ধিতে,