পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

দাদাবাবু দু’ হাত ও দাড়ি নেড়ে বলে দিলেন, “ও যা খুসী তাই করবে, ও একেবারে স্বাধীন।” বাস, তারপর আমার যবনিকার অন্তরালে দাঁড়িয়ে উল্লাসে নৃত্য ও প্রতিপক্ষদের মুখ কাঁচু মাচু করে কাষ্ঠ হাসি হেসে সরে পড়া। রেগে মেগে দিদিমা বললেন, “এঃ! বুড়োর ভীমরতি ধরছে, কথার ছিরি দেখো না!” দাদাবাবু কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে দন্ত কিড়িমিড়ি করে ইসারায় দেখিয়ে দিলেন যেন কার মুখ ধরে মেঝেয় রগড়াচ্ছেন আর মুখে বললেন, “বেওকুফ কুফ্—কুফ্—কুফ্!” তাঁর গালাগালের ভাণ্ডারে ওর বেশী সঞ্চয় আর ছিল না, খুব রাগলে ঐ পর্য্যন্ত বলতেন।

 বড় মামারও সেই মত সেই রায় সুতরাং আমায় পায় কে? আমারই পোয়াবারো। বোধ হয় ছয় মাস কি এক বছর দেওঘরে থাকার পর একদিন স্কুলে বের হচ্ছি, বাগানের কাছে দেখি পাকা বাঁশের লাঠিটি হাতে রামরাজ তেওয়ারি স্বশরীরে দাড়িয়ে। আমি তো অবাক, “দারোয়ানজী! তুমি এখানে?”

 দ। হ্যাঁ, অনেক দিন তোমাদের দেখিনি, তাই দেখতে এলুম।

 রামরাজ অনেক কথাই জিজ্ঞেস করতে করতে আমার স্কুল পাঠ্য বইএর বোঝা নিজের হাতে বয়ে নিয়ে মাঠের পথে মহুয়া বন দিয়ে আমার পাশে পাশে চললো। স্কুলের কাছাকাছি এসে বইগুলি আমায় ফিরিয়ে দিয়ে বললো, “বাবা, মা এসেছেন।” আমি তো হতভম্ব! মা! এখানে মা?

১০৪