পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তা’লে তোমার রাঙা মায়ের কাছে নিয়ে যাব। কেমন, যাবে?

 আমি। যাব, কিন্তু আমায় যে মা খাটের সঙ্গে হাত পা বেঁধে রাখে। দরজা খুলবো কি করে?

 বাবুটি অবাক হয়ে খানিক কি ভাবলেন, তার পর বললেন, “আচ্ছা, তুমি যাবে তো? তা হ’লেই হলো, আমি ব্যবস্থা করছি।” তিনি সে দিন চলে গেলেন। পরে শুনেছিলুম আমাকে বাবার কাছে নিয়ে যাবার জন্য মাকে বলেছিলেন, অনেক টাকার লোভ দেখিয়েছিলেন; মা কিন্তু রাজী হন নি। তাঁর কোলের ছেলেটিকে অমন করে ছেড়ে দিতে। আমার বেশ মনে আছে তখন শীতকাল, বোধ হয় অগ্রহায়ণ কি পৌষ মাস। পরের দিন সকালে পূর্ব্বাচলে সবে সোণার থালার মত সূর্য্য উঠছে। মা বেরিয়ে বারাণ্ডায় রোদে দাঁড়িয়ে বিড় বিড় করে আপন মনে কি সব বকছেন আর আমি তাঁর কাছ থেকে একটু দূরে বসে রোদ পোহাচ্ছি।

 বারাণ্ডাটার যে মুখটা পশ্চিমের দিকে ঘুরে গেছে সেইখানে কার যেন পায়ের খস্ খস্ শব্দ পাচ্ছি আর কোঁকড়টি হয়ে বসে বসে রোদ পোহাচ্ছি। হঠাৎ একটা গুণ্ডা কসমের গাঁট্টা গোঁট্টা মানুষ এসে মাকে বললো, “মেম সাহেব, ফুল লেগা?” সে এককোঁচড় ফুল মায়ের সামনে ঝপ করে ছুঁড়ে দিয়ে আমার দু’হাত চেপে ধরলো, তার পর আমাকে টানতে টানতে নিয়ে দে দৌড়! পিছনে পিছনে রৈ রৈ রবে হল্লা করতে করতে ছুটলো আরও

৩৭