পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

ঈশ্বরপ্রেমিক সাধক দেওঘরে আসেন। আমার দাদাবাবু রাজনারায়ণ বাবুর কাছে এমন অনেক মানুষই আস্‌তেন। এঁকে পেয়ে দাদাবাবুর আনন্দের অবধি ছিল না, পশ্চিম দিক্‌কার গোলাপ বাগানে ফুটফুটে জ্যোৎস্না রাতে ইন্দুবাবুর “রসলীলা”গান হতো,

সে কোন্ জ্যোছনা দেশ সই রে?
যেথা  অগণন চকোর
মধুপানে বিভোর
নাহি জানে নিত্য সুখ বই রে?
যেথা পাষাণ ভেদিয়া ফুটে জীবনের ফুল রে
প্রাণময়ী ভাষা যথা নাহি তায় কুল রে
যে দেশের অভিধানে
দুখ মানে সুখ রে,
তুমি মানে আমি বই নই রে!

 এই ধরণের গানগুলি এখনও আমার স্মৃতির ফলকে একেবারে মুছে যায় নি। তার পর ইন্দু বাবুর সে রসের উজান শুকিয়ে গেল, তিনি সংসারে ঢুকলেন, ‘রসলীলা’ও আজ বাঙলা সাহিত্য থেকে লুপ্ত হয়ে গেছে। ‘রসলীলা’ আমার জীবনকে ঘোরাল রসাল করে দিয়ে গেছে, আমাদের পরিবারের ধর্ম্মপ্রাণতা আমি উত্তরাধিকার সূত্রে হয়তো কিছু পেয়েছিলুম কিন্তু সে ঊর্ব্বর জমিতে পাট করেছে জলসেচ দিয়েছে যে কয়খানি বই “রসলীলা”ই তার প্রথম।