পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারি দুক্‌থু হবে আমার-

 —সত্যি গয়া, সত্যি তোমার দুক্‌থু হবে? ঠিক বলচো গয়া?

 —হবে, হবে, হবে। বাসায় যান, পাগলামি করবেন না পথে দাড়িয়ে-

 —একটা কথা-

 —আবার একটা কথা আর একটা কথা, আর ও গয়া শোনো আর একটু, ও গয়া এখানটায় বসে একটু গল্প করা যাক-

 —না। ও কথা না-

 —কি তবে? হাতী না ঘোড়া?

 —ও সব কথাই না। মাইরি বলচি গয়া। শোনো খুব দরকারি কথা তোমার পক্ষে। কিন্তু খুব লুকিয়ে রাখবে, কেউ যেন না শোনে-

 এই দেখাশোনার কয়েক দিনের মধ্যে প্রসন্ন চক্কত্তি শশী মুচির বাজেয়াপ্তী জমির মধ্যে উৎকৃষ্ট জলি ধানের পনেরো বিঘে জমি গয়ামেমকে মেপে শ্রীরাম মুচিকে দিয়ে খোটা পুতিয়ে সীমানায় বাবলা গাছের চারা পুতে একেবারে পাকা ক’রে গয়াকে দিয়ে দিলে। গয়া মাঠে উপস্থিত ছিল। একটা ডুমুর গাছ দেখে গয়া বললে-খুড়োমশাই, ওই ডুমুর গাছটা আমার জমিতি ক’রে দ্যান না? ডুমুৱা খাবো-

 —যদি দিই, আমার কথা মনে থাকবে গয়া-

 —হি হি-হি হি-ওই আবার শুরু হোলো।

 — সোজা কথাডা বললি কি এমন দোষ হয়ে যায়? কথাডার উত্তর দিতি কি হচ্ছে? ও গয়া一

 —হি হি হি-

 —যাক্ গে। মরুক গে। আমি কিছুটি আর বলচি নে। দিলাম চেন ঘুরিয়ে, ডুমুর গাছ তোমার রইল।

 —পায়ের ধুলো নেবো, না নেবো না? বেরাহ্মণ দেবতা, তার ওপর খুড়োমশাই। কত পাপ যে আমার হবে।

 গয়া এগিয়ে গিয়ে গড় হয়ে প্রণাম করলে দূর থেকে। কি প্রসন্ন হাসি

২৬১