পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ উপদেশ । যদিও ব্রাহ্মধৰ্ম্ম কোন বিশেষ ব্যক্তিকে মধ্যবৰ্ত্তী বলিয়া স্বীকার করেন না ; কিন্তু ব্রাহ্মধৰ্ম্ম এই দৃশুমান জগৎকে গুরু বলিয়া গ্রহণ করিতে উপদেশ দেন। ঈশ্বর অন্তরে বাহিরে সর্বত্র বিরাজমান। একদিকে তিনি প্রতিজনের অন্তরতম, গৃঢ়তম স্থানে বাস করিতেছেন, কাহারও সঙ্গে তাহার কিছুমাত্র ব্যবধান নাই, অন্যদিকে তিনি বহুদূরে। তাহার এবং জীবাত্মার মধ্যে এই প্রকাণ্ড সংসার মধ্যবৰ্ত্তী হইয়া রহিয়াছে। আমাদের সন্মুখে এই প্রকাণ্ড পৃথিবী, প্রকাণ্ড চন্দ্র স্থৰ্য্য, প্রকাণ্ড পৰ্ব্বত সাগর ও বিস্তীর্ণ প্রান্তর রহিয়াছে। এই বিশ্বের প্রান্তভাগে কে ? এই বিশ্ববস্ত্রে কাহার মুখ লুক্কায়িত ? এই স্বষ্টির অন্তরালে দাড়াইয়া কে ? সৰ্ব্বশক্তিমান বিশ্বস্রষ্ট। এই স্বষ্টিরূপ বস্তুদ্বারা আপনার মুখ ঢাকিয়াছেন। তিনি এই আশা করিয়া আবরণ মধ্যে রহিয়াছেন যে, তাহার সন্তান এই আবরণ তুলিয়া জননীকে দেখিবে। মিসর দেশে এক দেবতা চির অবগুণ্ঠনে আবৃত থাকিত। মিসর দেশের ধৰ্ম্মে অনেক গুঢ় অর্থ ছিল। স্থষ্টিপতি, সংসারের স্বামী স্বষ্টির অন্তরালে দাড়াইয়া আছেন। এই যে স্তুৰ্য্যের আলোক আসিতেছে, ইহা কি একেবারে আসিতেছে ? না ! ইহা প্রকাণ্ড বায়ু রাশির ভিতর দিয়া আসিতেছে। যদি এই বায়ুরাশি না থাকিত, তবে কে জানে স্থৰ্য্যের উত্তাপে হয়ত সকলে মরিয়াই যাইত। তেমনি ঈশ্বরের জ্যোতি স্থষ্টির মধ্য দিয়া আসিতেছে। কিন্তু অন্যান্য ধৰ্ম্মের মধ্যবৰ্ত্তীর লক্ষণ ব্রাহ্মধৰ্ম্মের বিরোধী। অন্ত ধৰ্ম্মাবলম্বীর মধ্যবৰ্ত্তীর নিকট প্রার্থনা করে ; কিন্তু ব্রাহ্মধৰ্ম্মের মধ্যবৰ্ত্তী মনুষ্যের প্রার্থন বন্দনা গ্রহণ করে না। উষা, স্থৰ্য্য, নদী, পৰ্ব্বত বন্দনীয় নহে। বরং ইহার আমাদিগকে ঈশ্বরের নিকট লইয়া যায়। নিৰ্ম্মল পূর্ণ চন্দ্ৰ দেখিলে কে না ঈশ্বরকে স্মরণ করে ? চন্দ্র ত বলে না, হে ব্রাহ্ম, তুমি আমাকে পূজা কর। চন্দ্র কাহার আনন্দিত হাস্ত প্রকাশ করে ? চন্দ্রকে দেখিতে দেখিতে