$8. উপদেশ । প্রতিধ্বনি। প্রতিধ্বনিতে আকাশ পূর্ণ। প্রথম শতাব্দী অন্ত শতাব্দীকে প্রতিধ্বনি দিল। কি দিল যুগ যুগকে ? ঈশার শব্দের প্রতিধ্বনি, মুশার শব্দের প্রতিধ্বনি। আদি ইহার কি ? ঈশ্বরের শব্দ । লোলি পৰ্ব্বতের ন্যায় দূর হইতে নিকটে, নিকট হইতে আবার দূরে প্রতিধ্বনি হয়। প্রশান্ত মহাসাগরে যদি কেহ একটী প্রস্তর ফেলে, প্রথম একটী ক্ষুদ্র তরঙ্গ হয়, তার পর একটী বড় আয়তন তরঙ্গ হয়, তার পর আর একটা হয়। শেষে হয় কি ? শেষে কোটী কোটী ক্রোশ ব্যাপী প্রশান্ত সাগরকে উদ্বেলিত করিয়া তোলে। তেমনি ভক্তরূপ ক্ষুদ্র প্রস্তরাভিঘাতে পরমাত্মা-সাগরে যে তরঙ্গ হয়, তাহা প্রথম বেদীর চার দিকে বদ্ধ থাকে, ক্রমে উড়িষ্যায় যায়, পঞ্জাবদেশে যায়, গুজরাটে যায়, ইংলণ্ডে যায়। ব্ৰহ্মাণ্ড ব্যাপ্ত হইয়া পড়ে। এই যে শব্দ, ইহা ব্রহ্মের প্রকাশ । ধন্যবাদ করি তাহাদিগকে, র্যাহারা এই শব্দকে রক্তমাংসের আকার দিতে পারেন । র্তাহাদিগের ভিতরে অনাহত শব্দ আহত শব্দ হয়। বীণাপাণি আর কে ? সেই, যার মুখ হইতে ব্ৰহ্ম অভিভাব, ব্রহ্ম আজ্ঞা বিনির্গত হইয়া এমনই শব্দ করে যে, সমুদয় বাদ্যযন্ত্র হার মানে। অতএব হে ভ্রাতৃগণ! এই শব্দের প্রতি অমনোযোগ করিও না । শ্রোতার এই গৌরব যে, প্রেরিত শ্রোতা স্থশব্দ কুশব্দের পার্থক্য বুঝিতে পারেন। প্রেরিত সিদ্ধ বক্তা যেমন কুশব্দ বলেন না, কেবল অন্তরে বাজে যে শব্দ তাই বলেন, প্রেরিত শ্রোতা তেমনই স্থশব্দই শ্রবণ করেন। আমাদিগের মন্দির হইতে তাই বাজুক, আমরা শ্রবণপুটে তাহাই সঞ্চয় করি। আমরা মুনি হই, ধারক হই, শব্দ-ব্রহ্মে হৃদয় পুর্ণ করি, শব্দ আহার করি। বৃক্ষ লতা আমাদিগের নিকট গান করুক ; অচেতন, সচেতন সকলে মিলিরা অশব্দ ব্রহ্মের ভাব শব্দায়মান করুক। ঈশ্বর আমাদিগের উপর এই সৌভাগ্য বিধান করুন ।