পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্র । গভীর পাতালেই নিপতিত হই, একাকী বিজনে বসতি করি, অথবা এই নববিধানমণ্ডলী-মধ্যগত হই, সৰ্ব্বত্র সেই মহাদেবদর্শনে আনন্দিত থাকি । অতএব ইহা নিঃসন্দেহ, অন্তরের ধৰ্ম্ম ও বাহিরের ধৰ্ম্ম ব্রহ্মকৃপাতে এক হয় । কিন্তু বায়ু যথেচ্ছ গমন করে, তুমি তাহার শব্দ ও স্পর্শ মাত্র অনুভব কর, কোথা হইতে বায়ু আসে, আর কোথায় চলিয়া যায়, কিছুই জান না । তেমনি এই ব্রহ্মকৃপা কোথা হইতে কখন আসে, কিরূপে কাৰ্য্য করে, আবার কোথায় অন্তৰ্দ্ধান হয়, তুমি তাহার কি জান ? শ্রান্ত পথিক যেমন গৃহে গমনের প্রতীক্ষা করে, তৃষিত চাতক যেমন জলের জন্য উদ্ধৃদিকে তাকাইয়া থাকে, আমরাও ব্রহ্মকৃপার জন্য তেমনি সতৃষ্ণ হইয়া তাকাইয়া থাকি। অন্তরের ব্যাকুলত সহকারে প্রতীক্ষা করি। কিসে তিনি প্রকাশিত হইবেন, কিসে তিনি অবতরণ করিয়া আত্মাকে বিশুদ্ধ করিবেন, আমরা জানি না। কেবল এইমাত্র জানি, তাহার পদচিহ্ন না দেখিলে, র্তাহার কৃপা অনুভব করিতে না পারিলে, সাধন ও ধৰ্ম্মমণ্ডলী অসার | মানিলাম, “ব্রহ্মকৃপাহি কেবলম্”—ব্রহ্ম কৃপা ভিন্ন কিছু হইবার নহে ; তথাপি তোমার আমার কি কিছু কর্তব্য নাই ? উষর ভূমিতে শস্ত উৎপন্ন হয় না ; কিন্তু সমুচিত পরিশ্রম সহকারে কৃষক যদি তাহাতে হল চালনা করে এবং তাহার এই চেষ্টা ও শ্রমের সঙ্গে যদি আকাশেয় বারিধারা সংযুক্ত হয়, তবে তাহাতে প্রচুর শস্য উৎপন্ন হইতে পারে, তেমনি তোমার শুষ্ক আত্মা কিছুই উৎপন্ন হইবার উপযুক্ত না হইলেও, যদি তুমি চেষ্টা কর, সাধনা দ্বারা কর্ষণ কর, এবং ব্রহ্মকৃপা তাহাতে মিলিত হন, তবে আত্মা প্রচুর শস্যশালী হইতে পারে।