পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইহকাল ও পরকাল। న অহঙ্কার বিবেচনা করিয়া দেখ। সকলে একই স্থানে যাইতেছি। ধূলি ধূলির সঙ্গে মিশ্রিত হইল ; যেখানে ধনীর শরীরের ধূলি, সেইখানে দরিদ্রদেহের ধূলি। শূন্ত ধনীর অট্টালিকা, দরিদ্রের পর্ণকুটারও শূন্ত ; ধনীর বিধবার হাহাকার ধ্বনি দরিদ্রের দুঃখিনী বিধবার চীৎকারের সহিত মিশ্রিত হইল । হে সন্ত্রান্ত শব, কোথায় তোমার অট্টালিকা, তোমার ধনের অভিমান কোথায় ? তোমার সৌন্দৰ্য্য, বস্ত্র, অলঙ্কার, মান সন্ত্রম কোথায় ? নীরব সেই ধনীর মুখ। যখন জিজ্ঞাসা করি, হে দরিদ্রের শব, কোথায় তোমার পর্ণকুটার, ছিন্নবস্ত্র, শাকান্ন কোথায় রাখিয়া আসিয়াছ ? জঘন্য ভাবে এখানে শয়ন করিয়া আছ কেন ? কোন উত্তর পাই না। এই ভয়ঙ্কর পথ দিয়া আমাদিগকেও পরলোকে প্রবেশ করিতে হইবে । হে মনুষ্য ! তোমার জীবনের স্রোত অনন্তকালের সাগরে মিশ্রিত হইতে যাইতেছে, সাবধান হইয়া পৃথিবীর পথে পদপরিচালনা করিও । এই সমুদায় কথা শুনিলে বৈরাগ্যের উদয় হয়। চতুর্দিকের উন্নতি, জগতের শোভা, পরিবারের বন্ধন সকলই স্বপ্ন বোধ হয়, অসার বোধ হয়, আত্মা উদার হয়, বিহ্বল হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইহলোকে পরলোকে বিশেষ প্রভেদ অবস্থিতি করে না। মৃত্যু তত ভয়ানক নহে, হঠাৎ যেমন হৃদয় মনে করে। এই পৃথিবীর মধ্যে জীবন মৃত্যুর পরিচয় দেয় এবং আত্মা অনন্তকালের আভাস প্রাপ্ত হয়। ঈশ্বর ইহলোকের, ঈশ্বর পরলোকের। “স্বর্গে তোমা ভিন্ন আমার আর কে আছে, এবং ভূমণ্ডলে তোমা ভিন্ন আমি আর কিছুই প্রার্থনা করি না।” তাহারই ইহজীবন, তাহারই সেই অনন্ত জীবন। পরকালের ভয় কিসে? কেবল পাপ করিয়াছি বলিয়৷ মৃত্যু পরলোককে ভয়। এই পৃথিবীতেই যে তোমার পাপের দও আরম্ভ হইয়াছে, তন্নিমিত্ত পরকালের জন্য অপেক্ষা করিতে হইবে ૨