পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Qbア করুণ! সাঙ্গনা বাজিতেছিল, মূঢ় মধুরধ্বনি যেন সুন্দর শুভ্ৰ জ্যোৎস্না জীবন্ত করিয়া তুলিতেছিল। সহসা বাদ্য থামিল, তরুণী ভ্ৰভঙ্গী করিয়া কহিল, “আমি বাজাইব না ।” তরুণ বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কেন করুণ ?” “তুমি ত শুনিতেছ না ?” ” “না—শুনিতেছি।” “কি শুনিতেছ?” “কেন :-বীণা ?” “বল দেখি, কি বাজাইতেছিলাম ?” তরুণী হাসিয়া উঠিল, তাঙ্গর কলকণ্ঠের কলহান্ত সুদূর পর্বতমালায় বীণার ঝঙ্কারের ন্যায় প্রতিধ্বনিত হইল। তরুণী জিজ্ঞাসা করিল, “বল দেখি কি বাজাইতেছিলাম ?” “ভীমপলশ্ৰী।” “কোথায় ভীমপলশ্ৰী শুনিয়া আসিলে ?” “কেন—তোমার নিকটে " “আমার মুখে বুঝি ভীমপলশ্রু বাজিতেছে ?” “করুণ, তোমার মুখ—” “যথেষ্ট হইয়াছে, কবিবর। এখন আর আমার মুখের বর্ণনা করিতে হইবে না।” “করুণ, দেশে-গৌড়ে এমনই জ্যোংস্না-পুলকিত পূর্ণিমা-নিশিতে উদ্যানের সরোবর-ঘটায় বসিয়া এই বীণায় একদিন ভীমপলশ্ৰী বাজাইয়াছিলে,— মনে পড়ে ?” “যাও—” “মনে পড়ে কি না বল ?” “পড়ে।” “সেদিন ঋষভ আসিয়া রসভঙ্গ করিয়া দিয়াড়িল ।” অলিন্দের কোণ হইতে একজন বলিয়া উঠিল, “এবং আজি ও রসভঙ্গ করিতে আসিয়াছে।” তরুণী লজ্জারুণ বদন অবনত করিয়া অবগুণ্ঠন টানিয়া দিল, তরুণ অপ্রতিভ হইয় ফিরিয়া বসিল । ঋষভদেব অলিনে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “ঠাকুরাণি ! বড় মিঠা বাজিতেছিল । ঠাকুরাণীর রন্ধন ও বাদ্য উভয়ই গুড়ের ন্যায় মিষ্ট্র—তবে কোমল হস্তের চপেটাঘাত কি প্রকার মিঃ তাহা ভানুমিত্র বলিতে পারে।” তরুণীর বেণীবদ্ধ মস্তক অধিকতর অবনত হইল । তরুণ জিজ্ঞাসা করিল, “খুষভ, তোমার রোহিণী গোয়ালিনীর চপেটাঘাত কি এইরূপ মধুর ?” স্থূলকায় ব্রাহ্মণ ঈষৎ হাস্ত করিয়া কহিল, "ভানু, সেটা এখনও আস্বাদিত হয় নাই, তবে ক্ষীর সর ও নবনী তেমন মধুর নহে, কারণ