পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ab" করুণা “সেনানিগণ, আপনার সাম্রাজ্যের ভূতা, আমি সম্রাটের প্রতিনিধি। আমি আদেশ করিতেছি, আপনারা আমার অসি গ্রহণ করিয়া আমায় বন্দী করুন। ভানু, অগ্রসর হও”। কম্পিতপদে ভানুমিত্র অগ্রসর হইলেন । যুবরাজ কহিলেন, “আমার অসি গ্রহণ কর।” অশ্ৰুরুদ্ধকণ্ঠে ভানুমিত্র জিজ্ঞাসা করিলেন, “যুবরাজ–স্কন্দ—অবশেষে—আমি ?” “হা, ভানুমিত্র, তুমিই। সাম্রাজ্যের কার্য্যে স্নেহ নাই, গ্রীতি নাই, মমতা নাই। মহারাজাধিরাজের আদেশ অবশু প্রতিপালিত হইবে, আমার অসি গ্রহণ কর।” ভানুমিত্র চিত্ৰপুত্তলিকার স্থায় যুবরাজের অসি গ্রন্থণ করিলেন, এবং তাঙ্গ মস্তকে স্পর্শ করাইয়া দণ্ডধরের হস্তে প্রদান করিলেন । তৎক্ষণাৎ কোম হইতে অসিগ্রহণ করিয়া ভানুমিত্র জানুস্পর্শে তাহ দ্বিখণ্ডিত করিলেন এবং ভগ্ন অসি ভূমিতে নিক্ষেপ করিয়া দ গুপরকে কহিলেন, “দণ্ডধর, পাটলিপুত্রের দূতকে কহিও, গৌড়ীয় মহাবলাধিকৃত ভানুমিত্র বিদ্রোহী, সে যুবরাজ ভট্টারকের অসি গ্রহণে সমর্থ নহে ।” সঙ্গে সঙ্গে হর্ষ গুপ্ত, চক্রপালিত, হরি গুপ্ত, ও বন্ধুবৰ্ম্ম স্ব স্ব আসি জানুস্পর্শে ভগ্ন করিয়া ভূমিতে নিক্ষেপ করিলেন । স্কন্দ গুপ্ত বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমরা কি করিলে ?” সহান্তবদনে কুমার হর্ষ গুপ্ত কহিলেন, “আৰ্য্য, কৰ্ত্তব্য সম্পাদন করিয়াছি মাত্র।” “হর্ষ, আমরা যে উত্তরাপথের তোরণে ! পিতৃব্যের আদেশ কি বিস্তৃত হইয়াছ ? মহারাজাধিরাজ আমাকে বন্দী করিতে আদেশ করিয়াছেন, তোমরা কি জন্ত কৰ্ত্তব্য বিস্তৃত হইতেছ?” ভানু বুঝিতে পারি নাই স্কন্দ, তোমার হার কৰ্ত্তব্যবোধ আমাদিগের নাই, আমরা যাহা কৰ্ত্তব্য বুঝিয়াছি তাহাই করিয়াছি । হর্ষ। আর্য্য, আমরা সাম্রাজ্যের ভূতা, মহারাজাধিরাজের দাস, কিন্তু আমরা গুপ্তবংশজাত, আমিও চন্দ্রগুপ্তের পৌত্র, কোন মুখে শিরস্ত্রাণে অসি স্পর্শ করাইয়া ইন্দ্ৰলেখার জারকে অভিবাদন করিব ?