পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম অধ্যায় । ২৬৭ গোমাংস ও লোণ গাঙ্গের ধৃত দুষ্পাচ্য মৎস্য । এই ভীষণ গ্রীষ্মে, তাহীও প্ৰধান্তরূপে পরিণত হইল । ইংরাজের। তাছাদের কাজকৰ্ম্মের জন্য যে সমস্ত স্কুলী-মজুর বা মিস্ত্রী নিযুক্ত করিয়াছিলেন, তাহার হিজলী—সহর ছাড়িয়া নদী পার হইয়া, অপর পারে পলাইতে লাগিল। আর এই ভীষণ বিপত্তির সময়ে—সায়েস্তাখার প্রেরিত, মোগল-সেনারাও হিজলীর সন্নিহিত হইয়া পড়িল । পূৰ্ব্বে বলিয়াছি—হিজলীর সেনাপতি মালেক-মাশেম, হিজলী দুর্গ ত্যাগ করিয়া পলাইয়া যান। তিনি পুনরায় সৈন্যবল সংগ্ৰহ করিয়া, হিজলীর অপর পারে রসুলপুরে, গোলন্দাজ-সেনা স্থাপন করিলেন । চার্ণক—বুঝিলেন, নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকিলে এবারে রক্ষার অর্ণর কোন উপায়ই নাই । যে উপায়েই হউক, মোগলের তোপথান দখল করিতেই হইবে। দুঃসাহসিক চার্ণক, অনর্থক সময়ক্ষেপ না করিয়া মালেক-কাশেমের মোগল সৈন্যগণকে আক্রমণ করিলেন । প্রথমতঃ তিনি শক্রর পনর হাজার মণ চাউল লুঠ করিয়া গৃহজাত করিলেন । দ্বিতীয়বার আক্রমণে, মোগলের তোপখানার একাংশ বিধ্বস্ত করিয়া দিলেন। বড় বড় কামানগুলি শক্তিহীন হইল-ইংরাজপক্ষ মোগলের কয়েকটা ছোট কণমান দখল করিলেন। প্রচুর গুলি ও বারুদ তাহদের হস্তগত হইল। এইরূপ প্রতিযোগিতার অবসরে ইংরাজপক্ষ কিছু সময় লাভ করিলেন বটে, কিন্তু সে সুযোগ দীর্ঘকাল উপভোগ করিতে পারিলেন না । মোগলপক্ষ পুনরায় সেনাবল সংগ্ৰহ করিয়া, নূতন তোপখান তৈয়ারী করিল । ইংরাজের যে সমস্ত জাহাজ ঞ্জিলীর কাছে নজর করিয়াছিল, সেগুলিকে সমুদ্রে তাড়াইয়া দিয়া, হিজলী দুর্গের উপর গোলা বর্ষণ আরম্ভ করিল। চার্ণকের অধীনস্থ ইংরাজ-সৈন্তের বেশীর ভাগ এই হিজলীদুর্গ মধ্যেই ছিল । নবাব সায়েস্তাখণর প্রেরিত, মোগল-সেনাধ্যক্ষ আবদুল সামেদও ঘটনাক্রমে এই সময়ে অসংখ্য বাহিনী লইয়া হিজলী পৌছিলেন । বার হাজার ফৌজ তাহার সঙ্গে। নবাব তাহাকে বলিয়া দিয়াছিলেন, “আমি তোমাকে পূর্ণ ক্ষমতা দিলাম। যে উপায়ে পার, ইংরাজদের বিধ্বস্ত ও তাড়িত করিতে চাও।” আবদুল সামেদ ইংরাজদের উচ্ছেদ করিবার ইষ্ট-এই নদী-উপনদী-বহুল স্থানের চারিদিকে ব্যাটারি বু! তোপখানা ইপিন করিলেন। ইংরাজদের জাহাজগুলির উপর, চারিদিক হইতে গোলাবর্ষণ হইতে আরম্ভ হইল । -