পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*8b- কলিকাতা লেকালের ও একালের । রহিম-সার সম্মুখে আসিয়া বলিল,—“দুরাত্মা ! আমিই আজিমণ্ডস্থান আমার সহিত যুদ্ধ কর।” এই কথা বলিয়া, হামিদ ক্ষিপ্রগতিতে ধনুকে তীরযোজনা করিয়া—রহিম-সার বক্ষঃস্থল লক্ষ্য করিল। তীর অবাধ হইল না । ইহার সঙ্গে সঙ্গেই আজিমের হস্তনিক্ষিপ্ত আর একটা স্ট্র রহিম-সার গ্রীবা বিদ্ধ করায়, রহিম-স। ভূতলে পতিত হইল। হামিদ খ ক্ষিপ্রগতিতে অবতরণ পূৰ্ব্বক—তাহার বক্ষঃস্থল চাপিয়া ধরিয়া, শিরচ্ছেদন করিলেন। তৎপরে রহিম-সার ছিন্নমুণ্ড তরবারির অগ্রভাগে বিদ্ধ করিয়া উদ্ধে ঘুর্ণায়মান করিতে লাগিলেন। আফগান-সৈন্স, এই ভীষণ ব্যাপার দেখিয়া, ভয়াকুলচিত্তে রণস্থল পরিত্যাগ করিল। আজিমওখান যুদ্ধজী হইলেন । রণবাদ্য—মোগলের বিজয়বাৰ্ত্ত ঘোষণা করিল । মোগলের অশ্বারোহী-সেনা, পলাতক আফগান-সৈন্সের পশ্চাদ্ধাবন করিয়া, তাহাদের শিবির পর্য্যন্ত অমুসরণ করিল। যাহাকে সম্মুখে পাইল, তাহাদেরই বধ করিল। আফগানগণ ছত্রভঙ্গ হইয়া পলায়ন করিল। অসংখ্য বন্দী ও বিপুল ধনভাণ্ডার মোগলের হস্তগত হইল। বিক্ষর-লক্ষ্মীর বরপুত্র সাহজাদা—ঞ্জয়মাল্য সুশোভিত হইয়া, বৰ্দ্ধমান-নগরে উপনীত হইলেন। এবং সমগ্র বাঙ্গলা বিহারের প্রজ, তাহাকে এই ভীষণ অত্যাচারময় বিদ্রোহ-দমনের জন্য, দুই হাত তুলিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিল। মহাপুরুষ হজরৎ-সাহ ইব্রাহিম ছাঙ্কার সমাধি-মন্দির দর্শনাস্তে, সাহজাদা—বৰ্দ্ধমান দুর্গমধ্যে প্রবেশ করিলেন। এই বিদ্রোহ-ব্যাপারের শেষাংশ বিবৃত করিবার জন্য, আমরা আবার রিয়াজের কাহিনী অতুসরণ করিতেছি । সাহজাদা আজিমওশ্বান বৰ্দ্ধমান হইতে পত্র প্রেরণ করিয়া, স্বীয় বিজর-বাৰ্ত্ত সম্রাটকে বিজ্ঞাপিত করিলেন। রহিম-সার পক্ষাবলম্বন করিয়া যাহার সম্রাট-শক্তির বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছিল, তাছাদের শাসনের জন্স এইবার মনোযোগী হইলেন । মোগল-সৈন্তগণ যে স্থানে আফগানদের সন্ধান পাইল, সেই স্থানেই তাহাদিগকে সমূলে বিনাশ বা বন্দী করিল। অত্যয়কাল মধ্যেই হুগলী, বৰ্দ্ধমান ও যশোর জেলা অফগান-শূন্ত হইল। আফগানদের অত্যাচারে, ষে সকল স্থান ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াছিল, বিদ্রোহ ও অত্যাচার শান্তির সঙ্গে সঙ্গে, তাহ! আবার জনপূর্ণ হইতে লাগিল বাঙ্গলার যে সকল গৃহস্থ, শোভাসিংহ ও রহিম-সার অত্যাচারে, হগলী বৰ্দ্ধমান প্রভৃতি স্থান ত্যাগ করিয়া দূরদেশে পলাইয়াছিল, গুহার। আবার ফিরিয়া আসিয়া গৃহকক্ষে দীপ জালিল ।