পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চদশ অধ্যায় । 8్ఫలి কৌশলময়ী, নৰ্ত্তকীগণ কখনও তাহার তৃপ্তিসাধন করে নাই । খোজদিগকে তিনি অন্তঃপুরের মধ্যে প্রবেশ করিতে দিতেন না। ষে সকল স্বালোকের নবাব-পরিবারের সহিত কোন সম্পর্ক নাই, তাহারাও অন্তঃপুরে রক্ত ছিলেন । কখনও পরকীয়ার সহবাস করেন নাই। কোন দাসী অন্তঃপুর হইতে একবার বাহিরে আসিলে, আর ভিতরে প্রবেশ করিবার অধিকার পাইত না । নবাব মুরশীদকুলী খী, অঙ্ক-শাস্ত্রে অতি সুপণ্ডিত ছিলেন : এই জন্য রাজস্ব-সম্বন্ধীয় সমস্ত হিসাব-পত্র, পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পর্যবেক্ষণ করিতেন। তাহার হস্তাক্ষর অতি সুন্দর ও মুম্পষ্ট ছিল। তিনি সরকারী সমস্ত কাগজ-পত্র লালকালীতে সহী করিতেন। মাসের শেষ দিবসে,সমস্ত সেরেস্তার কাগজ-পত্ৰ নিজে পরীক্ষা করিয়া, তাহাতে স্বাক্ষর করিতেন । এইরূপ স্বাধীনভাবে ও হাতে-কলমে কাজ করিয়া, তিনি রাজস্ববিভাগের আমূল পরিবর্তন করেন। বিচারীসম্বন্ধে তিনি হিন্দু মুসলমান উভয়েরই প্রতি সমদৃষ্টি নিক্ষেপ করিতেন। অর্থী-প্রতার্থী র্তাহার অধীনস্থ কৰ্ম্মচারীদের নিকট, কোন এর সুবিচার না পাইয়া, যদি কোন উপায়ে তাহার নিকট পৌছিতে পারিত—তাহা হইলে তাহার আশা পূর্ণ হইত। সাধারণের বিচার কার্য্যে নবাব, কাজী মোহম্মদ সরেফ, বলিয়া একজন শাস্তুবিং কাঞ্জীর পরামর্শ লইতেন। এই কাল্পী-সাহেব, সম্রাট ঔরঙ্গজেবের প্রিয়পাত্র। সম্রাটই ইহাকে বঙ্গদেশে বিচারকার্যের সহায়তার জন্ত পঠাইয় দেন। নবাব, এই কাজী সাহেবের ব্যাখ্যামত, কোরাণের ব্যবস্থা অনুযায়ী, বিচারকার্য্য নিৰ্ব্বাছ করিতেন । এই কাজী মহম্মদ সরেফের দুই একটা বিচার-প্রণালীর কথা আমরা এস্থলে উল্লেখ করিব । মুরশীদকুলী খাঁর আমলে, চুণাখালিতে বৃন্দাবন বলিয়া একজন হিন্দু তালুকদার ছিলেন। একদিন একজন ফকার, তাহার নিকট ভিক্ষা কুরিতে যায়। বৃন্দাবন তাহাকে ভিক্ষা না দিয়া বাট হইতে তাড়াইয়া দেন। ফকীর, বৃন্দাবনকে জব্ব করিবার জন্ত, পথ হইতে কতকগুলি ইষ্টক সংগ্ৰহ করিয়া সাজাইয়া রাখে। এই ইচ্ছুকগুলি সজ্জিত করিয়া, সে একটি ক্ষুদ্র প্রাচীর প্রস্তুত করে এবং তুহি মসজিদ নামে অভিহিত করিয়া, নিত্য উচ্চৈঃস্বরে আজান দিতে আরম্ভ করে। বৃন্দাবন যখন এই মসজিদের পাশ্ব স্থিা যাতায়াত করিতেন—তখন ফকীরের আজানের চীৎকারটা কিছু বৃদ্ধি